নতুন কৌশলে লিচু এখন বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে

মৌসুমি ফল লিচুর আগমন ঘটেছে সারা দেশে। গ্রীষ্মকালীন এই রসালো ফল শুধু স্বাদই ভরপুর নয়, পুষ্টিগুণও আছে যথেষ্ট পরিমাণ। গ্রীষ্মকালীন এই রসালো ফল খুব কম সময়ের জন্য আসে। বিক্রি হয় গণনা করে। তবে এবার এই বাজারে পিসের পাশাপাশি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে লিচু। নতুন এই পদ্ধতিতে লিচু কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। গাজীপুর, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জায়গায় লিচু বিক্রি হচ্ছে কেজি ধরে। এতে বেশ চটেছেন ক্রেতারা। তাদের দাবি, সিন্ডিকেট করে কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে লিচু।
স্থানীয় বাজারে ১০০ পিছ লিচু ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রতি কেজি লিচুর দাম ধরা হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে সরবরাহ কম থাকায় দাম তুলনামূলক বেশি। এ ছাড়া ক্রেতাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে পিসে ছাড়াও কেজি দরে লিচু বিক্রি করা হচ্ছে।
এক লিচু বিক্রেতা বলেন, ‘অনেকেই বলেন, পিস গুনে লিচু কেনা কষ্টকর, তাই চাহিদার কারণে কেজিতে বিক্রি করছি। এতে আমরাও লাভবান হচ্ছি, আবার ক্রেতারাও সহজে কিনতে পারছেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা রহিম বলেন, ‘বাচ্চাদের জন্য লিচু কিনতে এসে দেখি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগে যেখানে পিস আকারে কিনতাম, এখন কেজি ধরে নিতে হচ্ছে। এতে দাম একটু বেশি পড়লে সহজেই কেনা যাচ্ছে।’
চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন থেকে শুরু করে উপজেলা সদরের বাজারটিতে অন্তত স্থায়ী-অস্থায়ী ৩০টি ফল দোকানে বিক্রি হচ্ছে লিচু। প্রতিটি দোকানেই লিচু বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা থোকা থেকে লিচু ছাড়িয়ে কেজি দরে বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি বিক্রি করছেন ২০০ টাকা করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লিচু বিক্রেতারা কুমিল্লার সবচেয়ে বড় সবজি বাজার নিমসার থেকে হাজার হিসেবে লিচুর ঝুড়ি কিনেন। আকার ও মান ভেদে ১৮০০ থেকে তিন হাজার ২০০ টাকায় লিচু কিনে আনেন। দুই ঝুড়ি ছোট আকারের লিচুর সঙ্গে এক ঝুড়ি মাঝারি আকারের লিচু মিশিয়ে কেজি দরে বিক্রি করে। ক্রেতারা এক কেজি লিচু কিনে পাচ্ছেন ৪০ থেকে ৪৫ পিস।
লিচু ক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, ‘জন্মের পর থেকে কখনও কেজি দরে লিচু কিনি নাই। এ বছর চান্দিনা বাজারে নতুন কৌশল চালু করেছে ব্যবসায়ীরা। গত এক সপ্তাহ আগে সকল লিচু ব্যবসায়ীরা মিটিং করে ওই সিন্ডিকেট করে। পরদিন থেকে চান্দিনা বাজারে কোনো লিচু থোকায় দেখা যায় না। ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের ধোকা দিচ্ছেন। থোকায় থাকা লিচু ক্রেতারা দেখে বুঝে শুনে কিনতে পারত। এখন আর সেই সুযোগ নাই। এখন তারা (ব্যবসায়ীরা) যেভাবে যা দেয় তাই নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।’
একজন লিচু ক্রেতা বলেন, ‘আমি ৫০০ টাকায় আড়াই কেজি লিচু কিনি। বাসায় গিয়ে গুণে পাই ১০০ পিস। সেই হিসেবে প্রতি পিচ লিচুর দাম পড়েছে পাঁচ টাকা। থোকায় থাকা লিচু পিস হিসেবে বিক্রি করলে বিক্রেতারা আড়াইশ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে পারত। কিন্তু, কেজি দরে বিক্রি করে সেই লিচু ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন।’
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অনেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৮ মে/আরজেড)

মন্তব্য করুন