প্রস্তাবিত বাজেট আগের সরকারের ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে পারেনি: আমীর খসরু

বাজেটের আকার ছোট হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট আগের সরকারের ধারাবাহিকতা থেকে খুব একটা বের হতে পারেনি। বাজেটের আকার ছোট হওয়া উচিত ছিল। গুণগত দিক দিয়ে এবারের বাজেটে তেমন পরিবর্তন নেই, সংখ্যার সামান্য পরিবর্তন রয়েছে। তাই সরকারের জন্য এই বাজেট বাস্তবায়ন করা খুব একটা সহজ হবে না।
সোমবার বিকালে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাজেটের মৌলিক দিক নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে আমির খসরু বলেন, এই বাজেটে মৌলিক জায়গায় দূরত্ব রয়ে গেছে। গুণগত দিক থেকে আমরা কোনো পরিবর্তন দেখি না। কাঠামোগত কিন্তু আগের টাই রয়ে গেছে।
আগামী ৪ জুন বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাজেটে স্বভাবতই আমার প্রত্যাশা সীমিত। কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের একটা সীমাবদ্ধতা আছে, সময়ের ব্যাপার আছে। এছাড়া একটি নির্বাচিত সরকারের বাজেটের প্রতি অ্যাপ্রোচ—যে দীর্ঘ সময় তার থাকার মেয়াদ, এই ব্যবধানগুলো তো আমাদেরকে বুঝতে হবে।'
তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, বিগত সরকার বাজেটের আকার বাড়াতে বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেটার সঙ্গে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, যখন রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে ব্যয় হয়ে যাবে, তখন পুরো উন্নয়ন বাজেটটা কিন্তু দেশের ভেতর থেকে কিংবা বাইরে থেকে ধার করে চালাতে হবে। ফলে যে সমস্যাটা হয়—সরকার যখন দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ঋণ নেয়, সেই ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে এবং দেশের মানুষকে সেটা দিতে হয় বছরের পর বছর। এছাড়া, ঋণের ওপর সুদের কারণে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হয়। আবার দেশের ভেতর থেকে ঋণ নিলেও যে সুদ পরিশোধ করতে হয়, সেটা দেশের সামগ্রিক বাজেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।'
এরআগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে গত অর্থবছরের চেয়ে বাজেটের আকার কমেছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো অর্থবছরে বাজেটের আকার আগের বছরের তুলনায় ছোট হলো।
এদিন বিকাল ৩টায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থ উপদেষ্টা। সংসদ না থাকায় তার বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়।
অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্যে, একটি টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কিছুটা সংস্কারভিত্তিক এই বাজেটে উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে পরিকল্পনা থাকছে।
এর আগে সবশেষ জাতীয় সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছিল ২০০৮ সালে, যখন ক্ষমতায় ছিল সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তৎকালীন অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/০২জুন/জেবি/এমআর)

মন্তব্য করুন