শ্রীপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ৩০

গাজীপুরের শ্রীপুরে শ্রমিককে ছুটি না দেওয়ায় কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার পাঁচ শতাধিক শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা ও পুলিশের সাঁজোয়াজানে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এতে পুলিশ-শ্রমিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, সোমবার রাতে কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল থেকে নিহতের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তারা। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে শ্রমিকরা কারখানা ও পুলিশের একটি এপিসি গাড়িতে ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হন। কারখানার ভেতরে অবস্থান করছেন বিপুল সংখ্যক শ্রমিক।কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, পুলিশ পূর্বপরিকল্পিতভাবে সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। টিয়ারশেলের আঘাতে তাদের অন্তত ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
অপরদিকে পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় এই হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশের ৯ জন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কারণে সেখানে কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে। তবে এতে শ্রমিক আহতের মতো ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে সোমবার (২ জুন) রাত ৮টায় কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মো. জাকির হোসেন (৩০) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিনি নেত্রকোণা জেলার বারহাট্রা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে। তিনি জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানায় চাকরি করতেন।
শ্রমিকদের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইতে গিয়েছিলেন জাকির। কিন্তু ছুটি না দিয়ে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণে তিনি অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। লাফিয়ে পড়ার পর তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টায় চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে কারখানার এজিএম জুবায়ের বাসার বলেন, ‘নিহত ওই শ্রমিক ছুটি চাইতে যাননি। বরং তিনি জানতে পেরেছেন পারিবারিক কলহের কারণে হতাশায় ভুগছিলেন ওই শ্রমিক। হতাশা থেকেই তিনি লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।’
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের গাজীপুরের শ্রীপুর সাব জোন পরিদর্শক মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে তাদের আমরা ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি।
(ঢাকা টাইমস/০৩জুন/এসএ)

মন্তব্য করুন