বার্ন ইনস্টিটিউটে রক্ত দিতে ছুটে এলেন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা চলছে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৭ জন এবং আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৭১ জন। এর মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ৪৪ জনের মধ্যে অন্তত ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহতদের চিকিৎসার জন্য বিপুল পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই বিপর্যয়ে রক্ত দিতে এগিয়ে এসেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের মধ্যে ব্যতিক্রমী এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঢাকার বনানী, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৪০০ জন হিজড়া সদস্য বার্ন ইনস্টিটিউটে এসে রক্ত দিতে শুরু করেন।
রক্ত দিতে আসা সামিয়া নামের এক হিজড়া সদস্য বলেন, “মানবিক সহযোগিতায় আমরা এগিয়ে এসেছি। মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। এটি একটি বীভৎস ঘটনা। এমন দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে। আহতদের যেন ভালো চিকিৎসা দেওয়া হয়।”
আরেকজন বলেন, “অনেক বাচ্চা মারা গেছে। আমাদেরও খারাপ লেগেছে। আমরাও মানুষ। এ ঘটনা আমাদের হৃদয় নাড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমরা দল বেঁধে রক্ত দিতে এসেছি।”
হিজড়া জনগোষ্ঠীর এই উদ্যোগকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ রক্ত সংগ্রহে নিয়োজিত বিভিন্ন সংগঠন সাধুবাদ জানিয়েছে।
এর আগে সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ বিমান উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তরার মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে। প্রচণ্ড শব্দ আর আগুনের গোলায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্লাস চলাকালীন দুর্ঘটনা ঘটায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় ব্যাপক বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক।দুর্ঘটনার সময় কলেজে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ ও আগুনে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে, কেউ শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। সবশেষ খবর অনুযায়ী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ এবং চিকিৎসাধীন শতাধিক।
(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/এলএম)

মন্তব্য করুন