ছেলে-মেয়েসহ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দৃুর্নীতির তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু সোমবার

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে আগামীকাল সোমবার (১১ আগস্ট)।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই মামলাগুলো দায়ের করে। এসব মামলায় শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে এসব মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পৃথক তিন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসানকে আদালত হাজির হতে সমন জারি করা হয়েছে।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দুর্নীতির পৃথক তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ আগস্ট দিন ধার্য রয়েছে। সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পৃথক তিন মামলার বাদীকে আদালত হাজির হতে সমন জারি করা হয়েছে। এদিন তারা আদালতে হাজির হবেন বলে আশা করছি।’
ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্তে প্রাপ্ত আরো চারজনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
শেখ হাসিনা ছাড়াও এ মামলায় অপর ১১ আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য শফি উল হক,খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সজিব ওয়াজেদ জয় ও তার মা শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্তে প্রাপ্ত আরো দুইজনসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।
শেখ হাসিনা ও জয় ছাড়াও এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত অপর ১৫ আসামি হলেন-জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন,সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ- পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্ত প্রাপ্তে আরো দুই আসামিসহ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
শেখ হাসিনা ও পুতুল ছাড়াও মামলার অপর ১৬ আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একইসঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। সূত্র: বাসস।
(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/মোআ)

মন্তব্য করুন