অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের বিক্ষোভ
নোয়াখালীর সদর উপজেলার অশ্বদিয়া গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে অনৈতিক প্রস্তাব, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হয়রানি ও শারীরিক হেনস্তা করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে অপসারণ করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রীরা এ কর্মসূচি পালন করে। এর আগে কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে জড়ো হয় ছাত্রীরা।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ছাত্র দের অভিযোগ, সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন এ প্রতিষ্ঠানে তার দীর্ঘ কর্মজীবনে গরিব অসহায় ছাত্রীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন, তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে ওই বিষয়গুলোতে ফেল করিয়ে দেন। ফারুক হোসেন শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় বসে বসে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, ছাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে অশালীন আচারণ করেন এবং গায়ে পর্যন্ত হাত দেন।
ছাত্রীরা আরও অভিযোগ করে, ওই শিক্ষক নিজের ইচ্ছেমতো বিদ্যালয়ে আসনে, অষ্টম শ্রেণিসহ বিভিন্ন শ্রেণির পাঠদান না করে নিজের মতো এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ান। ছাত্রীরা তাকে পাঠদানের জন্য ডাকলে তাদের সাথে অশালীন আচরণ করে। বিদ্যালয়ের প্রধানসহ অন্য শিক্ষকরা এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে তাদের সাথেও খারাপ আচরণ করতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রীর ভাষ্য, ‘ফারুক হোসেন আমাদের মেসেঞ্জারে, হোয়াটসঅ্যাপে ও মোবাইলে কল এবং মেসেজ দিয়ে কক্সবাজার, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গার হোটেলে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা তাতে সাড়া না দিলে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়ান। তার এমন কর্মকাণ্ডে আমাদের সামাজিকভাবে মানসম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। বাবার সমতুূল্য একজন শিক্ষকের এমন আচরণে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
দ্রুত সময়ের মধ্যে এ শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা আরও বিপদে পড়বে বলে আশঙ্কা শিক্ষার্থীদের।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও একজন সহকারী শিক্ষক তিনজন ছাত্রীর নেতৃত্বে তার বিরুদ্ধে এসব অপবাদ দিচ্ছেন।
মোবাইল ফোনের মেসেজ ও স্ক্রিনশটগুলো বানানো বলেও দাবি করে ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেইনি। ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করাচ্ছে। এছাড়া আমি শুধু দশম শ্রেণির ক্লাস করাই। অধ্যক্ষের টাকা লুটপাটের বিষয়ে আমি জেলা প্রশাসককে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিনাত রেহানা বলেন, ‘শিক্ষক ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফারুক হোসেনের আলাদা দুটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। অভিযোগগুলো তদন্ত করতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদ দেবে। প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(ঢাকাটাইমস/২০নভেম্বর/মোআ)
মন্তব্য করুন