যে কোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখব: তারেক রহমান
যে কোনো মূল্যে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন,
বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা নিরাপদ। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এ জন্য যে কোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।
মঙ্গলবার বিকালে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির আয়োজনে সিলেট বিভাগের নেতাদের জন্য ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ও জনসম্পৃক্তি সাংগঠনিক বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সকল দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। এটির মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে তা যুক্তিসঙ্গত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লেখা থাকে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত নিয়ে ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এ জন্য যে কোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, পতিত স্বৈরাচারের সময় যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, দেশের মানুষ আমাদের সাথে রয়েছে। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা নিরাপদ। এ জন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এই আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, আজকে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আসুন আমরা মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী নিজেদের গড়ে তোলার চেষ্টা করি। পলাতক স্বৈরাচারের অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে যারা টিকে আছেন তারা আগামীতেও টিকে থাকবেন বলে আমি মনে করি।
বিএনপির শীর্ষ নেতা জোর দিয়ে বলেন, আমাদের গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে হবে, গণতন্ত্রকে চালু রাখতে হবে। যেখানে যেটাই নির্বাচন হোক সেটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে হতে হবে।
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আর্লি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।
কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য এম. নাসের রহমান, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।
উল্লেখ্য, সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া কর্মশালা চলে টানা বিকাল ৫টা পর্যন্ত। কর্মশালায় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/ইএস)
মন্তব্য করুন