সিলেটে বন্যার অবনতি, দুর্ভোগ চরমে
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সিলেটের আট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উজানের এলাকায় বন্যার পানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে নিম্নাঞ্চলে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে জকিগঞ্জ উপজেলা।
সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও গতকালের ছেয়ে দুই নদীর পানি কিছুটা কমেছে।
বন্যার কারণে পাঠদান রয়েছে ২০৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ১৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
কুশিয়ারা অববাহিকায় ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ওসমানীনগর উপজেলার বন্যার পানি কিছুটা বেড়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। এছাড়া নতুন করে প্লাবিত হয়েছে জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্ত্রীর্ণ অঞ্চল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। নদীর পানি কিছুটা কমলেও উজানের ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ছে।
নদীর পানি তীর উপচে প্রবেশ করায় সুরমা ও কুশিয়ারা অববাহিকায় নদীর তীরের দুই শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়েছে। দুর্গত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। কিছু এলাকায় ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগও দেখা দিয়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ঢাকাটাইমসকে জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা আসছেন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বন্যায় বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। জেলায় ১১টি আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে অনেক মানুষ। ত্রাণ তৎপরতা তেমন একটা নেই বললেই চলে।
বিয়ানী বাজারের শেওলা এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর আজমল আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রায় ১০ দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। কেউ কোনো খোঁজ নেয়নি। ঘরে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। কাজ নেই। কী করে খাবো। দিনে একবারও খাবার জুটছে না।’
ফেঞ্চুগঞ্জের গয়াসী গ্রামের অরণ্য বিশ্বাস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দুই মাস আগে অকাল বন্যায় ফসল চলে গেছে। এখন ঘরে কোমর পানি। কাঁচা ঘর যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।’
জেলা প্রশাসক জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ৩০০ মেট্রিকটন চাল ও প্রায় পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/এমএ/জেবি)