সিরাজগঞ্জে নতুন করে ২৩ গ্রাম প্লাবিত

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি তিন সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অভ্যন্তরীণ করতোয়া, গুমানী, হুরাসাগর, ফুলজোড় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও ২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ যমুনা নদীর শহর রক্ষা বাঁধ এলাকা দিয়ে তিন সেন্টিমিটার পানি কমে ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যার পানিতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকা বাঁধ ভেঙে বাহুকা, চিলগাছা, ইটালী, ভেওয়ামারা ও গজারিয়াসহ ২৩টি নতুন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বাহুকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সহস্রাধিক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ রক্ষার কাজ করছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যায় জেলার ৫০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৪টি ইউনিয়ন। জেলার বেলকুচি, শাহজাদপুর, কাজিপুর, সদর ও চৌহালী উপজেলার ২৪৭টি গ্রামের ৪৭ হাজার ৬৬০টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৮০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ২৭ হাজার ২৭৭টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

৩২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ছয় কিলোমিটার বাঁধ ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে বন্যা কবলিতদের জন্য ১৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যায় ৯১৪০ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩৫০ মেট্রিক টন চাল, দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও নগদ ১২ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক মো. ইউসুফ রেজা জানান, বন্যা কবলিত পাঁচটি উপজেলার ১৩৯টি বিদ্যালয়ের মাঠে ও ২৭টির ভবনে পানি উঠেছে। কাজিপুর উপজেলার ফুলজোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে ১৭৭টি আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের নিয়ে মনিটরিং সেলের মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে জেলায় এখনও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। বন্যা মোকাবেলায় তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর