রাস্তায় গণপরিবহন কম, ভোগান্তিতে মানুষ
ঢাকা- চিটাগাং ও নারায়ণগঞ্জ রোডে পরিবহন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে শিশু, নারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। কাজলা, শনির আখরা, রায়েরবাগ, মেডিকেল স্ট্যান্ডে অনেক যাত্রী গাড়ি সংকটে সঠিক সময়ে গন্তব্যে যেতে পারছেন না। অনেকে বাসের ভেতরে জায়গা না পেয়ে দরজার হ্যান্ডেল ধরে ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে রওনা হন।
সোমবার সকাল নয়টার দিকে কাজলা স্ট্যান্ডে শত শত কর্মজীবী মানুষকে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মাঝে মাঝে দুএকটি গাড়ি আসলে তাতে উঠার জন্য সবাই হুমড়ি খাচ্ছেন। দুই একজন বাসে বাসে উঠতে পারলেও অধিকাংশই উঠতে পারছেন না। সিটিং সার্ভিসের নামে যেসব পরিবহন চলছে সেগুলোর প্রত্যেকটি যাত্রীতে ঠাসা। এসব গাড়িতেও অনেকে দরজার হ্যান্ডেল ধরে ঝুলে আছেন। লেগুনাগুলোর বাম্পারেও তিল ধারনের ঠাঁই নেই। প্রতি লেগুনার পেছনে চার থেকে পাঁচজন করে দাঁড়িয়ে আছেন। পুরুষরা ঝুলে ধাক্কা ধাক্কি করে গাড়িতে উঠতে পারলেও নারী ও ছাত্রীদের তাকিয়ে দেখা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই রোডে সব সময় গাড়ির সঙ্কট ছিল। তবে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর এটা মহাসংকটে পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছেন ঢাকা মেডিকেল ও নিউমার্কেটগামী যাত্রীরা। এই রোডে নির্দিষ্ট দুইটি পরিবহন কোম্পানি ঠিকানা ও মৌমিতার বাস চলে। এ ছাড়া কিছু পরিমাণ লেগুনাও চলে। এদিকে গুলিস্তানগামী লোকাল বাসগুলো অফিস টাইমে সিটিং হয়ে যাওয়ায় তখন সঙ্কট চরমে উঠে।
ইডেন কলেজে পড়েন রিমা। কাজলা স্ট্যান্ডে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে গাড়িতে উঠতে হয়। অনেক গাড়িতে মেয়ে দেখে উঠাতে চায় না। ফাঁকা বাসে কলেজে যাব এটা চিন্তাও করা যায় না। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে যখন একটা খালি গাড়ি পাই তখন উঠি। তাও পুরুষদের সঙ্গে ঠেলাঠেলি করে উঠতে হয়।
ঠিকানা পরিবহনের চালক আকাশ জানান, ঠিকানা পরিবহনের ২০০টির মতো বাস চলতো। বর্তমানে তা অর্ধেকে ঠেকেছে। অনেক গাড়ির কাগজপত্র না থাকায় রাস্তায় নামাতে পারছে না। গাড়ি কম চলায় যাত্রীদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে।
অনাবিল পরিবহন কোম্পানিতে শেখ মওলার দুইটি বাস চলে। মওলা ঢাকাটাইমসকে বলেন, অনাবিল কোম্পানিতে এক সময় ৮০ টির মতো বাস চলতো। এখন ৬০টির মতো চলছে। গাড়িতে একটু এদিক ওদিক হলে সার্জেন্ট তিন চার হাজার টাকার মামলা দিয়ে দিচ্ছে। এজন্য একটু সমস্যা থাকলেও সেই গাড়ি চলছে না।
লেগুনা চালক রাসেল বলেন, নিউমার্কেট চিটাগাং রোডে ৮০টির লেগুনা চলতো। এখন ২০টির মতো চলে। যার কাগজপত্র ঠিক আছে সেই শুধুমাত্র সাহস করে চালাচ্ছে।
ঢাকাটাইমস/০৩সেপ্টেম্বর/এমএবি/এমআর