ঘুরে আসুন সামরিক জাদুঘর, চলছে প্রদর্শনী

বিজয়ের মাসে স্বাধীনতার চেতনা আরো বেশি উজ্জীবিত করতে বিজয় সরণির সামরিক জাদুঘরে ‘বঙ্গবন্ধু ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ শুরু হয়েছে।
বিজয়ের মাসের প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশন আয়োজিত প্রদর্শনীতে ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম আর ঐতিহাসিক ১২০টি স্থিরচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। সামরিক জাদুঘরের মাঠের মাঝখানে চৌকোণা বৃত্ত করে সাজানো হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ছবিগুলো। রয়েছে ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীও। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে ঘুরতে এসেছে উদয়ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তারা জানায়, মুক্তিযুদ্ধ তাদের কাছে অনেকটা রূপকথার মতো। বই পড়ে মুক্তিযুদ্ধের আনেক বিষয় জেনেছে তারা। কিন্তু প্রদর্শনিতে এসে তাদের মনে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসে গৌরবের দিন ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবসটি আড়ম্বরপূর্ণভাবে উদযাপন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই স্থির ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলল হক বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। তাহলে তাদের কেউ আর বিভ্রান্ত করতে পারবে না।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিন বাহিনীর প্রধান, সামরিক-বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর
১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত সামরিক জাদুঘরটি ১৯৯৯ সালে স্থায়ীভাবে বিজয় সরনিতে স্থানান্তর করা হয়। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করতে ২০০৪ সালে সামরিক জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর কমান্ডারদের ব্যাজ, পোশাক, অস্ত্র, গোলাবারুদ, ক্যানন, এন্টি এয়ারক্রাফ্ট গান এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন যানবাহন জাদুঘরটিতে রক্ষিত রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন যানবাহন এবং অস্ত্রও এখানে সংরক্ষিত রয়েছে। জাদুঘরের সামনে মাঠে রাখা ২৬টি বিভিন্ন মডেলের ট্যাংকসহ সাঁজোয়া যানও দেখতে পাওয়া যাবে।
সবার জন্য উন্মুক্ত এই জাদুঘর ঘুরে দেখতে কোনো প্রবেশমূল্য লাগবে না। সপ্তাহের বুধবার ছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে সামরিক জাদুঘর। শুক্রবার বেলা তিনটা থেকে এবং অন্যান্য দিন সকাল ১০টা থেকে প্রবেশ করা যায়।
এ ছাড়া ১৬ ডিসেম্বর এবং ২৬ মার্চ ছাড়া অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনে বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর বন্ধ থাকে।
প্রদর্শনীতে আসা একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেন, এখন এখানে এলে জাদুঘরও দেখা হবে, আবার বঙ্গবন্ধু ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসসম্বলিত আলোকচিত্রও দেখা যাবে। তিনি সবাইকে প্রদর্শনিতে আসার আহ্বান জানান।
(ঢাকাটাইমস/১নভেম্বর/জেআর/মোআ)

মন্তব্য করুন