ভোগান্তির অপর নাম দৌলতদিয়া ঘাট

এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী
  প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০১৯, ০৮:৩৪| আপডেট : ২০ জুলাই ২০১৯, ২১:০২
অ- অ+

পদ্মা নদী পারাপারের অপেক্ষায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রীবাহী বাস ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে। আর পণ্যবাহী ট্রাক আটকে থাকে দিনের পর দিন। এটা এই ঘাটের নিত্যদিনের চিত্র। এই রুটের চালক ও যাত্রীদের নিত্যদিনের এই দুর্ভোগ এখন যেন নিয়তিতে পরিণত হয়ে গেছে।

এই রুটে ফেরি সংকট, নদীতে তীব্রু স্রোত ও ঘাট সংস্কারের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। যানবাহন পারাপারে প্রয়োজনের তুলনায় কম ফেরি চলাচল করায় সবধরনের যানবাহনকে দৌলতদিয়া প্রান্তে সিরিয়ালে থাকতে হচ্ছে। বর্তমানে ছোট-বড় ১৪টি ফেরি চলাচল করছে।

ঢাকামুখী পরিবহনের যাত্রীরা বলেন, দৌলতদিয়ায় যাত্রী ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। কী কারণে এই ভোগান্তি তা সবাই জানে। কিন্তু স্থায়ীভাবে কোনো সমাধান হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই এ রুটে পর্যাপ্ত ফেরি চালানো উচিত।

যাত্রীবাহী পরিবহন চালকরা বলেন, নদী পারের জন্য প্রতিদিনই তাদের দৌলতদিয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এতে যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এছাড়া দীর্ঘ সময় ঘাটে আটকে থাকায় শিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। নদীতে স্রোত আছে, কিন্তু ফেরি কম। আর ফেরিগুলোও দীর্ঘ ২৪/২৫ বছরের পুরনো। ফলে এগুলোও স্রোতের বিপরীতে ঠিকমত চলতে পারে না। এ নৌপথে যানবাহনের চাপ অনুসারে আরও নতুন নতুন ফেরি প্রয়োজন।

ভুক্তভোগীরা বলেন, কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে মূলত এ যানজটের সৃষ্টি হয়। কারণ প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ স্থায়ী কোনো সমাধানের উদ্যোগ নেয় না। পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নিলে এবং ফেরির সংখ্যা বাড়ালে তাদের এই ভোগান্তি হতো না। এ অবস্থায় সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

দৌলতদিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মায় অব্যাহত পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে তীব্র স্রোত। এতে প্রতিটি ফেরিকে নদী পার হতে আগের তুলনায় দ্বিগুণ সময় লাগছে। বর্তমানে এই রুটে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৪টি ফেরি যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করছে। এর মধ্যে বড় সাতটি ও ছোট সাতটি ফেরি। আগে একইসংখ্যক ফেরি দিয়ে দিনে ১৯০ থেকে ১৯৫টি ট্রিপ দেয়া যেত, এখন ১৫০ থেকে ১৫৫টি ট্রিপ দেয়া যাচ্ছে। ফলে নদী পারাপারের অপেক্ষায় সব যানবাহনকে সিরিয়ালে থাকতে হচ্ছে।

তারা আরও জানান, নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে মিল রেখে প্রতিনিয়তই ঘাটগুলোকে উঁচু-নিচু করতে হয়। এ কারণে সে সময় ফেরিতে গাড়ি লোড-আনলোড বন্ধ রাখতে হয়। সেই সঙ্গে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে ঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়ক পিচ্ছিল থাকায় যানবাহন লোড-আনলোডে সময় বেশি লাগছে।

এদিকে মালামাল সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছে দিতে না পারায় লোকসান গুণতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। সেই সঙ্গে সিরিয়ালে আটকে থাকায় ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়ছে খরচ। তারা এই সমস্যা থেকে উত্তরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বিআইডব্লিউটিএ দৌলতদিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছয়টি ফেরিঘাট নদীর পানির সঙ্গে মিল রেখে উঁচু-নিচু করতে হচ্ছে। পানি বাড়তে থাকায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ঘাট সাময়িক বন্ধ রেখে কাজ করতে হচ্ছে। বর্তমানে ছয়টি ঘাটের পাঁচটি হাই ও একটি মিড ওয়াটারে নেয়ার কাজ চলছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আবু আব্দুল্লাহ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় নদী পারাপারে ফেরিগুলোর দ্বিগুণ সময় লাগছে। এ কারণে ফেরির ট্রিপের সংখ্যাও কমে গেছে। ফলে দৌলতদিয়া প্রান্তে বেশ কিছু যানবাহন সিরিয়ালে রয়েছে।’ এই ঘাটে চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে তারা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাঙ্গুনিয়ায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
র‍্যাব সদর দপ্তরে আইনবিষয়ক সেমিনার ও এআই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে 'জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ' উদ্বোধন
দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে পিকআপের ধাক্কায় ব্যবসায়ী নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা