ডিবি অফিস থেকে ইয়াবা চুরিতে কনস্টেবল

সিরাজুম সালেকীন, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২২ আগস্ট ২০১৯, ১৭:৩৪
অ- অ+

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে মামলার আলামত হিসেবে রাখা পাঁচ হাজার ইয়াবা বড়ি চুরি সেখানেই কাজ করা একজন কনস্টেবলের কাজ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। আর এতে ওই কনস্টেবলের বাইরে আর কারো সম্পৃক্ততার তথ্য মেলেনি।

অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৮ বছর ধরে পুলিশে কাজ করে আসা সোহেল রানা। তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে পাঠানো হয়েছে কারাগারে।

ওই কনস্টেবল কী কারণে এই ঝুঁকি নিয়েছিলেন, তার সঙ্গে মাদক কারবারিদের সম্পৃক্ততা ছিল কি না, তিনি কাউকে বাঁচাতে এই কাজ করেছেন কি না, এই বিষয়গুলো নিয়ে এখন কাজ করছে পুলিশ।

বিষয়টি নিয়ে পুলিশের মধ্যে তোলপাড় হয়েছে। কারণ, গোয়েন্দা কার্যালয়ে চুরি হতে পারে, বিষয়টি এক ধরনের অনুমানের বাইরে ছিল। আর ঘটনাটির পেছনে কোনো চক্র আছে কি না তা বের করতে শুরু হয় তদন্ত।

মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার (এসি) মজিবর রহমানের কক্ষের একটি ড্রয়ারে মামলার আলামত হিসেবে রাখা ছিল ইয়াবা বড়িগুলো। ১৬ আগস্ট রাত আড়াইটার দিকে সেই ড্রয়ার ভেঙে ইয়াবা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে একজনের বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সকালে ড্রয়ার ভাঙা এবং ইয়াবা না থাকার কথা জানার পর শুরু হয় হুলস্থুল। পেছনে কে, সেটি বের করতে চলে অনুসন্ধান। তবে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল এবং রেকর্ড করা ফুটেজে ঘটনাটি ধরাও পড়ে। শনাক্ত হন, ওই ব্যক্তি সোহেল রানা। আটক করা হয় তাকে, তিনি সব স্বীকার করেন। তার বাসার খাটের জাজিমের নিচে পাওয়া যায় মাদকগুলো।

এরপর হয় মামলা আর বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জাল হোসেনের আদালতে পাঠানো হয় সোহেলকে। তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অভিযুক্ত কনস্টেবলের চলাফেরা ও গতিবিধি আগে থেকেই সন্দেহজনক ছিল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন ডিবি পুলিশের ইন্টারনাল ইনভেস্টিগেশনের তদন্তের পর মামলা করা হয়। ঘটনার সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করে দেখা যায় সেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং তার কাছ থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়।’

কনস্টেবল সোহেল রানা পুলিশে চাকরি করছেন ১৮ বছর ধরে। গত কয়েক বছর ধরে তিনি আছেন গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে। মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের কাকনা গ্রামে তার বাড়ি।

গেণ্ডারিয়া থানার এক মাদক মামলায় গত ৩০ জুলাই চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসামির কাছ থেকে পাঁচ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়। মামলার আলামত হিসেবে সেগুলো রাখা হয় ডিবি কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার মজিবর রহমানের কক্ষের একটি ড্রয়ারে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, গত ১৬ আগস্ট দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে একজন ডিবি কার্যালয়ের ফটক দিয়ে পুকুরপারে যান। পরে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও পেশাদার খুনি দমন টিমের (ডিবি পশ্চিম) অফিস কক্ষের সামনে দেখা যায় তাকে। রাত ৩টা ৩৫ মিনিটে ইয়াবা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে তিনি ডিবি অফিসের প্রধান গেটে দিয়ে বের হয়ে শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণির দিকে চলে যান।

পরদিন সকাল সাতটার সময় ডিবির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবু সুফিয়ান প্রধান গেটে দায়িত্ব পালনের জন্য যান। তিনি দেখতে পান দরজার সামনের বারান্দার সিলিং এবং ভেতরের দক্ষিণ কোণের সিলিং খোলা। পরে কক্ষে গিয়ে দেখতে পান মজিবর রহমানের কক্ষের থাই অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি দরজা ও তিনটি ড্রয়ারের তালা ভাঙা।

দ্বিতীয় ড্রয়ারে পলিথিনের ব্যাগে রাখা ছিল ইয়াবাগুলো। তখন বিষয়টি ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। এরপর সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শাহাবুদ্দিন খলিফা রমনা থানায় মামলা করেন।

ঢাকাটাইমস/২২আগস্ট/এসএস/ডব্লিউবি

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বৃহস্পতিবারের কুমিল্লা বোর্ডের  এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের জমিসহ বাড়ি জব্দ
মোবাইল বাজ বিডিতে নিয়মিত ভীড়, শুক্রবার ও মঙ্গলবারে প্রযুক্তিপণ্যে বাড়তি আগ্রহ!
বৃহস্পতিবার সারাদেশে আলিম ও কারিগরির এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা