জামিন অযোগ্য ধারা সংশোধনের দাবি পরিবহন মালিকদের

নতুন সড়ক পরিবহন আইন আইনের জামিন অযোগ্য ধারা পরিবহন চালক সঙ্কট বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছেন পরিবহন মালিকরা। নতুন আইনকে স্বাগত জানালেও জানালেও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কয়েকটি ধারা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার পরিবহন মালিকরা এক সংবাদ সম্মেলন করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এর আগে পরিবহন শ্রমিকরাও এই আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী প্রাণ হারানোর পর গেল বছর শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের পর শাস্তির বিধান কঠোর করে নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রনীত হয়। এই আইন ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
এর একদিন পর সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সংবাদ সম্মেলন করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরে। সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘এই আইনের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। এ আইন মেনে চলতে আমরা পরিবহন মালিকদের আহ্বান জানাব।’
‘তবে কিছু বিষয় পুনর্বিবেচনা করা দরকার। এ আইনের অনেকগুলো ধারা আছে, আমি মনে করি যেগুলো এই মুহুর্তে বাস্তবায়ন সম্ভব না। আইনের কিছু ধারা যেন সংশোধন করা হয়।’
কোন ধারাগুলো জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আইনের জামিন অযোগ্য ধারাটিসহ তিন-চারটি ধারা সংশোধন করা প্রয়োজন বলে পরিবহন মালিকরা মনে করেন।’
নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনার মামলায় শাস্তি বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আর এসব মামলা হবে জামিন অযোগ্য। এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে পরিবহন শ্রমিকদেরও।
মালিক সমিতির নেতা এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘শ্রমিকদের পক্ষ থেকেও প্রস্তাব আছে। নন বেইলেবল ধারাকে বেইলেবল করার জন্য। বর্তমানে চালকের সঙ্কট রয়েছে। জামিন অযোগ্য যদি হয়, দুর্ঘটনা ঘটলেই চালক যদি জেলখানায় চলে যায়। যদি জামিন না হয়, তাহলে চালকের সঙ্কট আরও বাড়তে থাকবে। তখন কী পরিস্থিতি হবে?’
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশে রেজিস্টার্ড ৩৮ লাখ যানবাহন রয়েছে। আর বিপরীতে লাইসেন্সধারী চালক রয়েছে ২০ লাখ। অর্থাৎ ১৮ লাখের মতো গাড়ি অপ্রশিক্ষিত চালকের হাতে রয়েছে।
রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।
রাঙ্গা বলেন, ‘এই আইনের ফলে মালিক-শ্রমিকরা যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয়। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মালিক শ্রমিকরা যেন অকারণে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকেও সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
সাবেক প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গা বলেন, ‘দুর্ঘটনার মামলা যেন ৩০৪(খ) ধারার পরিবর্তে ৩০২ ধারায় দায়ের না করা হয়। তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় চালক কাউকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হত্যা করেছে, সেক্ষেত্রে ৩০৪(খ) ধারা ৩০২ ধারায় স্থানান্তর করলে আপত্তি নাই।’
(ঢাকাটাইমস/০২নভেম্বর/ডিএম)

মন্তব্য করুন