নয় লাখ টাকার পুশ বাটন কাজ করে তো করে না

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:১৮| আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৩৪
অ- অ+

বাটন চেপে বাতি জ্বালিয়ে পথচারীদের সড়ক পারাপারে রাজধানীর আসাদ এভিনিউ আর মহাখালীর ব্রাকের সামনে বসানো হয় দুটি অত্যাধুনিক সিগন্যাল। এর পেছনে ব্যয় হয় নয় লাখ টাকার বেশি। তবে দুই সপ্তাহের মাথায় আসাদ এভিনিউয়ের পুশ বাটনটি হয়ে পড়ে অকেজো। তিন দিন ধরেও সে খবর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানতে পারেনি। তবে গতকাল বিকালে সেটি মেরামত করা হয়েছে।

এদিকে যাদের জন্য এমন সড়ক পারাপারের সিগন্যাল বসানো হচ্ছে সেই পথচারীদের অধিকংাশই এমন পুশ বাটন সম্পর্কে অবগত নন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মোহাম্মদপুরের আসাদ এভিনিউয়ের গ্রিনহ্যারাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও মোহাম্মদপুর পোষ্ট অফিসের সামনে সক্রিয় থাকা অত্যাধুনিক সিগন্যালটি কাউকে ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। এই পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় যার যেমন খুশি মতো রাস্তা পার হচ্ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে এই পুশ বাটনটি কাজ করছে না। স্কুলের নিরাপত্তা কর্মী জিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘স্কুল খোলা থাকা অবস্থায় আমরা নিজেরা সিগন্যাল দিয়ে বাচ্চা, লোকজনরে পারাপার করে দেই। সারাদিন তো আমাদের পক্ষে সেটা সম্ভব না।’

তবে বিকালে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট পর ফিরতি ফোন করে এই চারটা পুশ বাটন সিগন্যালের দায়িত্বে থাকা ডিএনসিসির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলে সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরহাদ বলেন, ‘সুইচ নষ্ট হয়েছে এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। আপনার (প্রতিবেদক) থেকে জানার পরপরই অকেজো বাটনটি ঠিক করা হয়েছে।’

মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাহিদা ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সিগন্যাল বাটনটি দেয়ার পর থেকে আমরা এটি ব্যবহার করেই রাস্তা পারাপার করি। কিন্তু নষ্ট থাকায় আমাদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। কারণ এখানে সিগন্যাল থাকলেও গাড়ি থামে না।’

পুশ বাটনের বিষয়ে প্রচারণা এবং সিগন্যালে এর ব্যবহার সম্পর্কে প্রচারণার দরকার ছিল জানিয়ে সৈকত হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নতুন একটা পদ্ধতি চালু করলে সেটির জন্য কিছু প্রচারণার দরকার। কিন্তু এখানে কোথায় এটার ব্যবহার সম্পর্কে জানানো নেই। মানুষ জানবে কিভাবে?’

এদিকে পুশ বাটন চাপার পর সিগন্যালে লাল বাতি জ্বলে উঠলেও চালকরা গাড়ি থামায় না বলেও অভিযোগ রয়েছে। সিগন্যাল পয়েন্টে প্রায় এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। মোহাম্মদপুর থেকে আসাদগেট এবং আসাদগেট থেকে মোহাম্মদপুর সড়কের দুই পাশের চিত্র একই। বাস, লেগুনা থেকে শুরু করে কোনো ব্যক্তিগত যানবাহনও সিগন্যালে থামছে না। ফলে বাটন চেপেও সেই সনাতন পদ্ধতিতে গাড়ি চালককে হাতের ইশারা দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হচ্ছে। অনেকে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়েই।

উল্লেখ্য, গেল ২৪ অক্টোবর ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘটা করে এই পুশ বাটন সিগন্যালের উদ্বোধন করেছিলেন। এ পদ্ধতিতে সড়কের উভয় পাশে দুটি বাটন রাখা হয়। যা একবার চাপ দিলে সিগন্যালের লাল বাতিটি ৩০ সেকেন্ডের জন্য জ্বলে উঠবে। এসময় পথচারীরা রাস্তা পারাপার হবেন। বাটন একবার চাপ দিলে পরবর্তী ২২০ সেকেন্ডের মধ্যে আর বাটন চাপলেও লালবাতি জ্বলবে না। এই সময় শেষ হওয়ার পরে পুনরায় বাটন চাপলে আবারো ৩০ সেকেন্ডের জন্য লাল বাতি জ্বলবে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ ধরণের সিগন্যাল পদ্ধতি চলমান থাকলেও বাংলাদেশে এটিই প্রথম। সড়ক দূর্ঘটনা কমিয়ে আনতে নগরের ৪৮টি স্থানে এ ধরনের সিগন্যাল পদ্ধতি চালু করার কথা রয়েছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রথমে ২০টি স্থানে এবং পরে বাকীগুলো স্থাপনের কথা রয়েছে। এর আগে পরিক্ষামূলকভাবে রাজধানীর আসাদ এভিনিউয় এবং বনানী ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এই পদ্ধতি চালু করা হয়। সিগন্যাল দুটি তৈরি করতে খরচ হয় ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।

(ঢাকাটাইমস/১০নভেম্বর/কারই/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সাভারের ট্যানারিতে এসেছে সাড়ে ৩ লাখ চামড়া: শিল্প  উপদেষ্টা 
দৃশ্যমান সংস্কার হলে এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকবে না: সারজিস আলম
অপু বিশ্বাস কোরবানির মাংস রান্না করলেন শাকিব খানের জন্য!
খুলনায় ট্রাক-ইজিবাইকের সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ২
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা