আমাদের একজন হুমায়ূন ছিলেন

ইফতেখায়রুল ইসলাম
 | প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:০৯

আমি তাঁকে চিনেছি সেই ছোট্টবেলায়।পড়েছিলাম তাঁর প্রথম বই।তার কিছুদিন পরে অনেক বইয়ের সাথে পড়লাম ‘মজার ভূত’ বইটি! শিশুসুলভ মশাদের নাম পি, পিপি, পিপিপি!! টোকাই ছেলের সুপার ন্যাচরাল পাওয়ার। মজাই লাগতো।লিখেছেন সায়েন্স ফিকশন,অদ্ভূত হলেও সত্যি তাঁর সায়েন্স ফিকশনও আমাদের মত সস্তা পাঠকের কাছে সমাদৃত হয়েছে।

আমি তাকে আরও ছোটবেলায় চিনেছিলাম ‘কোথাও কেউ নেই’। ধারাবাহিকে কী অদ্ভূত বিষয় নাটক চলাকালীন সময়ে একটা লোকও রাস্তায় পাওয়া যেতনা। বাকের ভাই, কুত্তাওয়ালী, তমালিকার নাকে টেনে কথা বলা, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মোনা,বদীসহ আরও কত প্রখ্যাত চরিত্রের চিত্রণ।

অয়োময়ো সেই বয়সে আমাদের অত ভাল লাগেনি কারণ গভীরতা বুঝিনি। নক্ষত্রের রাত,আজ রবিবারেও তাঁকে চিনেছি। এই আজ রবিবার নাটকে শীলা আহমেদ সূত্রধর হয়ে কি সুন্দর সকলকে পরিচয় করিয়েছিলেন। অদ্ভূত লেগেছে এই ভেবে যে এত আগে এই ইউনিক কনসেপ্ট।

আমি তাকে গভীরভাবে চিনেছি ‘শংখনীল কারাগারে’ চিনেছি আগুনের পরশমনিতে আরও চিনেছি ‘শ্রাবন মেঘের দিনে’। তিনি স্বমহিমায় উজ্জ্বল সেখানেও। হুম আমি তাঁর ‘কবি’ পড়েছি। আরও পড়েছি তারাশংকর এর ‘কবি’। নাহ আমি প্রভেদে যাইনি।

সমরেশ,সুনীল, শীর্ষেন্দুও পড়েছি। তারপরেও আমি কখনো অনুভব করিনি আমার হুমায়ূন পড়তে হবে না। কারণ তিনি সেই লেখক যিনি আমার বাল্যকাল, কৈশোর ও যৌবনের সময়কে রাঙিয়ে দিয়েছেন। তার সবচেয়ে বড় ক্ষমতা আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি সময়কে স্পর্শ করতে পেরেছেন।তিনি ছুঁতে পেরেছেন প্রতিটি শ্রেনীকে।

আর ঠিক এজন্যেই হুমায়ূনকে পড়া মানে নিজেকে চেনা ও পড়া মনে হয় আমার কাছে। হুম এটা ঠিক তাঁর কিছু বই পড়ার পর মাথা থেকে মুহূর্তেই হারিয়ে যায়। আবার অনেক বই কিন্তু মাথায় ঠিকই রয়ে যায়। সাহিত্য গুণ বিবেচনা করবেন বিশিষ্ট বোদ্ধাগণ। আমি বা আমার মত পাঠক শুধু জানেন, হুমায়ূন সময়ে সময়ে হয়ে উঠেছেন আমাদের সকলের। হুমায়ূন বলেই সম্ভব হয়েছে একাধারে হিমু, মিসির আলী, রুপা, মাজেদা খালার মত বহু চরিত্রকে স্মরণীয় মাত্রা দেবার।

আমাদের কৈশোর খুব ভাল কেটেছিল কারণ আমাদের একজন হুমায়ূন আহমেদ ছিল। অনেকেই আসবেন আরো কিন্তু একজন হুমায়ূন আর আমরা পাবো না। আহা ভবিষ্যত প্রজন্ম জানবে শুধু, আমাদের একজন হুমায়ূন ছিলেন।

লেখক:অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন), ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি, ঢাকা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :