বইমেলায় ঔপন্যাসিক স্বকৃত নোমানের যত বই

অনলাইন ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:৩৫

এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ঔপন্যাসিক স্বকৃত নোমানের নতুন গল্পগ্রন্থ ‘বানিয়াশান্তার মেয়ে’ ও মুক্তগদ্যের বই ‘টুকে রাখা কথামালা’প্রকাশিত হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে দুটি পুরনো বইয়ের নতুন সংস্করণ।

২০১৭ সালে প্রকাশিত ‘শেষ জাহাজের আদমেরা’ উপন্যাসটির নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স থেকে। রোদেলা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘মুসলিম মনন ও দর্শন : অগ্রনায়কেরা’ শীর্ষক একটি পুরনো বইয়ের নতুন সংস্করণ।

বানিয়াশান্তার মেয়ে চৌদ্দটি গল্পের সংকলন। যমের ভয়ে জেগে থাকতে থাকতে চরজনমের ক্লান্ত মানুষেরা যখন ঘুমিয়ে পড়ে, অমনি হানা দেয় সমুদ্র। মানুষজন নিয়ে গোটা দ্বীপ তলিয়ে যায় সমুদ্রগর্ভে। বেঁচে থাকে শুধু একজন। কীভাবে বাঁচল? সাজু আটকা পড়ে ট্রেনের বাথরুমে। সে যখন বাঁচার আশা ছেড়ে দেয়, জীবনের মশাল হাতে সামনে এসে দাঁড়ায় স্টেশনের এক বেশ্যা। চর কুকরী মুকরী শাসন করেন মিথের মানুষ কালাপীর। নিশিরাতে মানুষ আর পশুপাখিরা যখন ঘুমায়, বন থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। রাতভর পাহারা দেন চর। একদিন জলের উপর দিয়ে হেঁটে তিনি চলে যান দূর সমুদ্রে। বদলে যায় চরের চালচিত্র। কেন বদলে যায়? ওদিকে বানিয়াশান্তা পতিতাপল্লির আঁখি হাসার সময় সাগরের মনে পড়ে যায় শীতঋতুর পাতা ঝরার দৃশ্য। আঁখিকে বিয়ে করে বাড়িছাড়া সমাজছাড়া হলেও হাল ছাড়ে না সাগর, সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাঁটতে থাকে গন্তব্যের দিকে। এমনই সব গল্প নিয়ে ‘বানিয়াশান্তার মেয়ে।’, বইটি প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইমেলায় পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের প্যাভিলিয়নে (১৯ নং) বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

স্বকৃত নোমানের শিল্পচর্চার মূল ক্ষেত্র গল্প-উপন্যাস হলেও লেখেন নানা বিষয়ে। তিনি মনে করেন, লেখার হাতটাকে চালু রাখার জন্য গদ্যকারকে প্রচুর লিখতে হয়। প্রতিদিনই। স্বকৃতও প্রতিদিন কিছু-না-কিছু লেখেন। সাত বছর ধরে ফেসবুকে লিখেছেন ‘টুকে রাখা কথামালা’ শীর্ষক একটি ধারাবাহিক গদ্য। এতে তিনি প্রকাশ করেছেন সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন, সমাজ, রাজনীতিসহ নানা বিষয়ে তাঁর মতামত, চিন্তা। ধারাবাহিকটি পায় পাঠকপ্রিয়তা, ছাপা হয় নানা পত্রপত্রিকায়। সেই কথামালা থেকে বাছাই করা ১০০টি লেখা নিয়ে এ বই। প্রকাশ করেছে বিদ্যাপ্রকাশ। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইমেলায় বিদ্যাপ্রকাশের (স্টল নং : ২৬৬, ২৬৭, ২৬৮, ২৬৯) স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।

চার শ বছর আগে মগ-ফিরিঙ্গি হার্মাদরা অপহরণ করেছিল সিতারাবানুর স্বামীকে। সিতারাকে তাড়া করেছিল ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্ন : তার শিশুপুত্রকে গিলে ফেলেছে সাগরের মস্ত এক কুমির। চার শ বছর পর নূরনিসাকে তাড়া করে আরেক দুঃস্বপ্ন : ধনেশ পাখি হয়ে উড়ে গেছে তার এক শিশুপুত্র। স্বপ্ন কি বাস্তবের রূপ নেয়? হয়ত নেয়। সমুদ্র স্নানের সময় উড়ে যায় শিবু। ভাগ্যান্বেষী শত শত আদম চলে যায় হাঙর-কুমিরের পেটে। পাঁচ শ তিরাশিজন যাত্রীবোঝাই এমভি সাউথ বেঙ্গল-৩ জাহাজটি কি শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় পৌঁছতে পেরেছিল? রাহাত কমল কি ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’য় সমকালীন প্রসঙ্গ খুঁজে পেয়েছিল? শেষ পর্যন্ত সে কি ফিরে আসতে পেরেছিল দেশে? আর সিতারাবানু কি জাতিস্মর? নইলে চার শ বছর পর আঁচল উড়িয়ে কিভাবে সে দাঁড়িয়ে থাকে বঙ্গোপসাগরের তীরে! এসব প্রশ্নের মীমাংসার চেষ্টা করেছেন স্বকৃত নোমান তাঁর উপন্যাস ‘শেষ জাহাজের আদমেরা’য়। দেখিয়েছেন ইতিহাস ও বর্তমান একটি জাহাজে মুখোমুখি বসে কীভাবে কথা বলছে, দুই শতাব্দীর মানব পাচারের ঘটনা কীভাবে গেঁথে গেছে আশ্চর্য এক সুতোয়। উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে। পাঞ্জেরী পাবলিকেন্স থেকে এবার প্রকাশিত হলো এটির দ্বিতীয় সংস্করণ। প্রচ্ছদ করেছেন রাজীব রায়। বইমেলায় পাঞ্জেরীর (১৯ নং) প্যাভিলিয়নে বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

মধ্যযুগে মুসলমানদের মধ্যে যাঁরা মুক্তচিন্তায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, জীবৎকালে তাঁদের কেউ রাজরোষের শিকার হয়েছেন, কেউ রক্ষণশীলদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন, কেউ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। দার্শনিক আল কিন্দি ও ইবনুল আরাবিকে কাফের ফতোয়া দেওয়া হয়, ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তারের সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নির্বাসনদণ্ড দেওয়া হয়, ওমর খৈয়ামকে নাস্তিক সাব্যস্ত করে পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর ঘর, ইবনে রুশদকে করা হয় অপমান-অপদস্ত, কবি ফেরদৌসীর লাশ মুসলিম গোরস্তানে দাফন করতে দেওয়া হয়নি, আল রাজিকে অন্ধ করে দেওয়া হয়, মনসুর হাল্লাজ ও শিহাব উদ্দিন সোহরাওয়ার্দিকে দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড। মধ্যযুগের এই অগ্রনায়কদের মধ্য থেকে বাইশজনের জীবন, মনন ও দর্শন নিয়ে এ বই। দর্শনের জটিল তত্ত্বগুলোকে করে তোলা হয়েছে অধিকতর সহজ। বইটি প্রকাশ করেছে রোদেলা প্রকাশনী। বইমেলা রোদেলা প্রকাশনীর (স্টল নং ৫৪০-৫৪৩) স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :