ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর ‘জোরপূর্বক গর্ভপাত’

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ মার্চ ২০২০, ২২:১৮

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মীরপুর গ্রামে ধর্ষণের শিকার এক স্কুলছাত্রীকে ‘জোরপূর্বক গর্ভপাত’ করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ৮ মার্চ ওই ছাত্রীর পিতা মামলা করেছেন। ধর্ষণ, অপহরণ, গর্ভপাতে সহায়তার অপরাধে এতে মুন্নু ওরফে মুস্তাককে মূল আসামি, তার ভাই মানিক, রশিদ, শুকুর ও বোন মনোরা খাতুনকে আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মীরপুর গ্রামের ওই ছাত্রীর বাবা ঢাকায় সিএনজি চালান। গত বছর ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই তার স্ত্রী জরুরি কাজে তাদের এক নিকটাত্মীয়ের বাড়ি অবস্থান করছিলেন। বাড়িতে একা পেয়ে প্রতিবেশী মুন্ন্নু ওরফে মুস্তাক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।

ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ধর্ষণের পর এ বিষয়ে তার মা-বাবা বা কারও কাছে বললে তাকেসহ তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় মুস্তাক। এরপরও একাধিকবার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে বিষয়টি কাউকে বলছে কি না সেই খোঁজখবরও নিতে থাকে মুস্তাক। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায়। তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে সন্দেহ হলে ৩ মার্চ ডাক্তারের পরামর্শে আল্ট্রাসনোগ্রাম করায় তার পরিবার। এতে জানা গেছে, সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে পরিবারের সদস্যদের চাপে সে পুরো ঘটনা খুলে বলে।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরের দিন মুস্তাক ও তার ভাইবোন মিলে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে তার বাড়ির সামনে থেকে তুলে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে তার গর্ভপাত ঘটান। এতে সে বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর অবস্থার অবনতি হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দুই লাখ টাকার বিনিময়ে এই গর্ভপাতে সহযোগিতা করেন খোকসা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সহকারী আরেনা খাতুন ভরসা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স শেফালী বেগম। অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তারা বিষয়টি স্বীকার করে তথ্য ফাঁস না করার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের পরিবার কল্যাণ সহকারী আরেনা খাতুন ভরসা সরকারি হাসপাতালের সামনে তার নিজ বাড়িতে এন আর ক্লিনিক নামের প্রাইভেট হাসপাতাল খুলে বছরের পর বছর প্রকাশ্যে অবৈধ গর্ভপাত ঘটিয়ে আসছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক প্রেমাংশু বিশ্বাস জানান, এই ঘটনার সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স শেফালী বেগম জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, ওই ছাত্রী গুরুত্বর অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :