করোনায় ছুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রেস্তোরাঁয় যুগলদের ভিড়

তানিয়া আক্তার
  প্রকাশিত : ১৯ মার্চ ২০২০, ২০:৪৫| আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২০, ২০:৫১
অ- অ+

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমনকি কোচিং সেন্টারও বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে ছুটির সময় নিরাপদে থাকতে শিক্ষার্থীদের বাসার বাইরে যেতে নিষেধ করা হলেও তা কেউ কানে তুলছে না। রাজধানীর ধানমন্ডিসহ বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে সেই প্রমাণ মেলেছে। প্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগ নিয়ে পাড়া মহল্লার রেস্টুরেন্টগুলোতে ভীড় করছেন কিশোর-কিশোরীরা।

সারাদেশের মানুষ যখন করোনা আতঙ্কে তখন উঠতি বয়সী এসব তরুণ-তরুণীকে দেখা গেছে আনন্দে সময় কাটাতে। অনেককে দেখা গেছে, রেস্টুরেন্টের ভেতরে একান্তে সময় কাটাতে। তবে অনেকে দলবেঁধেও আসছেন এসব জায়গায়।

বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডসহ এই এলাকার অনেকগুলো রেস্টুরেন্টে সরেজমিন গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। বিশেষ করে বিকাল গড়িয়ে নগরীতে সন্ধ্যা নামতে ধানমন্ডির এসব রেস্টুরেন্টে যুগলদের বেশি ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ধানমন্ডি ছাড়াও বসুন্ধরা শপিং মলের ফোডকোর্টেও অন্যান্য বয়সী মানুষের সঙ্গে কিশোর-কিশোরীদের বেশ উপস্থিতি দেখা গেছে। এদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এরা সবাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।

এদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এখন তো পড়ার চাপ নেই। তাই বন্ধুদের নিয়ে এসেছি।’

করোনা নিয়ে সচেতনার বিষয়ে জানতে চাইলে এড়িয়ে যান এই শিক্ষার্থী।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, সরকার ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করলেও এ ব্যাপারে শুরু থেকে কঠোর অবস্থান নেয়নি। যে কারণে ছুটি ঘোষণার পরপরই কক্সবাজার, সাজেকসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।

অন্য একটি রেস্টুরেন্টে আরেক শিক্ষার্থী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এখন তো সব প্রোগ্রাম রেস্টেুরেন্টেই হয়। আমরাও রেস্টুরেন্টে এসছি। এতে দোষের কি আছে? আড্ডার ফাঁকে পড়াশোনা নিয়েও কথা বলা যাবে।’

গত সোমবার করোনাভাইরাসের সংক্রামণ থেকে নিরাপদ থাকতে মঙ্গলবার থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বন্ধের সময় শিক্ষার্থীদের বাড়ি থাকারও নির্দেশ দেয়া হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেই নির্দেশনা না মেনে কেউ অভিভাবকদের সঙ্গে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যাওয়ার খবরে নড়েচড়ে বসে সরকার। বুধবার সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় ঘোরাফেরা করলে তাদের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।

এরপরও খোদ রাজধানীতে দেখা যায়নি নির্দেশের তেমন কোনো বাস্তবায়ন। পুরান ঢাকার বাহাদুরশাহ পার্কে দুপুরে দেখা গেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থীকে। যারা অন্য সময়ের মতোই আড্ডা দিয়ে সময় পার করছেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে অনেক অভিভাবক জানিয়েছেন তারা সন্তানদের বাসায় রাখতে পারছেন না। আর সরকারও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তা কার্যকর করতে তেমন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন কোনো কিছু নিয়ে তোলপাড় তখন কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হয়। বিষয়টা ভালো নয়।’

শুধুু কিশোর বয়সীরাও নয় শিশু বয়সীদেরও অভিভাবকের সঙ্গে রেস্টেুরেন্টগুলোতে দেখা গেছে। বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সের ফুডকোর্টে বাবা-মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা শেষে খাবার খেতে দেখা গেছে অনেককে।

এদিকে করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগপূর্ণ সময়েও শিক্ষার্থীদের সচেতন না হয়ে এমন চলাফেরা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা। সরকারি নির্দেশ অমান্য করার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।

ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘ বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি। বিভিন্ন পরিকল্পনাও রয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো তাদের পড়াশোনায় ব্যস্ত রাখতে। সেজন্য কিছু বাড়ির কাজ দেওয়ার পরিকল্পনায় রয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/টিএটি/বিইউ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিষিদ্ধ দলের কার্যক্রম ও নাশকতা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের
ই-কমার্সকে দারিদ্র্য বিমোচনের কম্পোনেন্ট করতে চাই: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
২১ মে থেকে পুনরায় ফ্লাইট চালু করছে নভোএয়ার
স্বাধীনতার পতাকা নিয়ে কথা বলায় সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে: রিজভী 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা