কুমিল্লায় রাতের আঁধারে হতদরিদ্রদের দ্বারে দ্বারে সাংসদ সীমা

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৮ এপ্রিল ২০২০, ২১:৫৫| আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২০, ২১:৫৮
অ- অ+

নির্জন রাত। নিস্তব্ধ নগরী। চারিদিকে শুনশান নীরবতা। করোনার প্রকোপে বিপাকে পড়া কর্মহীন ও হতদরিদ্র মানুষেরা ভাবনায় বিভোর। সপ্তাহব্যাপী নির্জন রাতে খাদ্যসামগ্রী হাতে নগরীর অলি-গলিতে ঘুরে বেড়ান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা। কড়া নাড়েন কর্মহীন ও হতদরিদ্র মানুষের দুয়ারে। ব্যক্তিগত অর্থায়নে নিজ হাতে তুলে দেন নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী।

গত কয়েক দিনে কুমিল্লা নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে বিপর্যস্ত মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে নিজ হাতে তিনি এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। ইতোমধ্যে স্থানীয়দের তোলা ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমার প্রচারবিমুখ কর্মকাণ্ডে সাড়া জাগায় জনমনে। ফেসুবকজুড়ে অভিনন্দনের ঝড় ওঠে।

নগরীর ২২নং ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান পিটু বলেন, ইপিজেড এ চাকরি করি এখনো এ মাসের বেতন পাইনি। ঘরে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। রাত সাড়ে ৯টায় হঠাৎ ঘরের দরজার ধাক্কা দিয়ে বাড়ির মালিক ডাক দেয়। আমি মনে করলাম, বাসার ভাড়ার জন্য ডাক দিয়েছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল। দরজা খুলেই দেখি সীমা আপা সালাম দিয়ে একটি বস্তা নেয়া জন্য বলল। আমি খুশিতে আত্মহারা। এ সময়ে বস্তায় পাঁচ কেজি চাল, তিন কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি ডাল,২ কেজি আটা,২ কেজি সয়াবিন তেল,২টি সাবান, ২টি মাস্ক ও ১টি হ্যান্ড সেনিজাইজার। পরক্ষণে আপা নিজ মোবাইল নাম্বারটি দিল বলল। প্রয়োজনে ফোন দিও। আমি চারিদিকে দেখলাম কে কে আছে। দেখলাম। একজন অটোচালক। ওনার পিএস আর ২ জন। আমি অবাক হলাম একজন এমপির সাথে তেমন লোকজন নেই।

আলেয়া বেগম বলেন, রাতে একজন এমপি আমাকে চাল-ডাল সাহায্য করেছে- তাও আবার নিজ এসে। এটাই সাহায্য না সীমাআপা যে আমার বাড়িতে এসেছে, এতেই আমার পেটের ক্ষিধা মিটে গেলে।

নুরপুর এলাকার শরীফ আহমেদ জানান, সীমা আপা রাতে আমাদের বাসায় এসেছেন আমাদের এলাকার অসহায়দের নিজ হাতে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন। আমি মোবাইলে একটি ছবি তুলতে গেলে আপা নিষেধ করেন। আর এটা আমার কাছে অনেকে ভালো লেগেছে। আপা প্রচার ছাড়াই সাধারণ মানুষদের সাহায্য করছেন।

ঠাকুরপাড়ার অধ্যক্ষ তাপস পাল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে করোনার প্রকোপে সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটালেও লজ্জার কারণে মুখ খুলে কারো কাছে কিছু চায় না। এমতাবস্থায় সামর্থবানদের উচিৎ এমপি সীমার অনুকরণে কর্মহীন ও হতদরিদ্রদের মানুষের প্রতি মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া।

এ বিষয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা এমপি বলেন, আমাদের মমতাময়ী বাংলার মা জননেত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যতটুকু সামর্থ্য সে অনুযায়ী আমি সাহায্য করছি। এ মহামারি যতদিন থাকবে, ততদিন করে যাব। তবে প্রচার করে না। সাংবাদিকদের কাছে আবেদন- সাহায্য ভোগী কোন ব্যক্তির ছবি প্রকাশ না করার অনুরোধ এমপি সীমার।

এমপি সীমার পিএস জয়ন্ত দেবনাথ বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আপা ব্যাক্তি গত অর্থায়নে প্রাথমিকভাবে কুমিল্লার নগরের ২৭টি ওয়ার্ড ও ৬টি ইউনিয়নে ৩টি ভাগে তালিকা করে সাহায্য করা হচ্ছে। অসহায় দুস্থদের ১০ কেজি চাল-ডালসহ ৮টি আইটেম, মধ্যবিত্তদের ৫ কেজি চাল, নিম্ম আয়ের শ্রমিকদের ৮ কেজি চালসহ ৮টি আইটেম একটি বস্তা ভর্তি করে দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২ হাজার চারজনকে দেয়া হয়েছে। আর সীমা আপার মোবাইল নাম্বারে যারা ফোন দিচ্ছে, তাদের ১০ কেজি চাল, ডাল-সবজিসহ খাদ্যসামগ্রী তার বাড়িতে পৌছেঁ দেয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/৮এপ্রিল/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নির্বাচিত হলে স্থানীয় সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস আমিনুল হকের
মিলন-জাদুর ঝলক কি দেখা যাবে আবার?
সরকারবিরোধী মিছিলের চেষ্টা: শ্যামপুরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
রুপগঞ্জে সমকামী সম্পর্কের জটিলতায় রুমমেটকে খুন, অতঃপর গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা