করোনা সংকট মোকাবিলায় একমত ইইউ নেতারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল ২০২০, ১৮:০৭
অ- অ+

মূলত নীতিগত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েই করোনা সংকটের অর্থনৈতিক পরিণাম মোকাবিলার অঙ্গীকার করলেন ইইউ নেতারা৷ ঋণের ভাগীদার হবার প্রশ্নে উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলির মধ্যে মতপার্থক্য দূর হচ্ছে না৷ বৃহস্পতিবার ভিডিও কলের মাধ্যমে বৈঠকে কিছু বিষয়ে একমত হলেও অন্য বিষয়ে মতপার্থক্য থেকে গিয়েছে।

ইতালি ও স্পেনের মতো করোনা সংকটে বিপর্যস্ত দেশের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে তেমন মতপার্থক্য নেই৷ প্রায় সব দেশেই লকডাউন বা কড়াকড়ির ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থমকে গেছে বলে সরকারি সহায়তা নিয়েও আপত্তি নেই৷ খবর ডয়চে ভেলের।

ইইউ নেতাদের মধ্যে প্রবল মতপার্থক্যের মূল কারণ পুরানো এক ক্ষত৷ এক দেশের ঋণের বোঝা বাকি সব দেশ মিলে ভাগ করে নেবে কিনা, সেই প্রশ্নে ইউরোপের উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলির মধ্যে অনেক কাল ধরে বিভাজন রয়েছে৷ জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশ নাগরিকদের করের অর্থ দিয়ে অন্য দেশের ঋণের ভাগীদার হবার প্রবল বিরোধী৷ করোনা সংকটের মাঝেও সেই মৌলিক অবস্থানে কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না৷ ফলে বাজারে ‘করোনা বন্ড' ছাড়ার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না৷

ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে শুধু কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেন সদস্য দেশের নেতারা৷ সেই সব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিস্তারিত কর্মসূচি স্থির করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইউরোপীয় কমিশনকে৷ প্রবল অর্থনৈতিক মন্দার মোকাবিলা করতে একাধিক পদক্ষেপের প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ অর্থনৈতিক প্রণোদনা হিসেবে কমপক্ষে এক লাখ কোটি ইউরো ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে৷ ইইউর দীর্ঘমেয়াদী বাজেটের মধ্যেই সেই তহবিল ‘নোঙর' করা থাকবে৷ তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার ফলে কমিশনকে পদে পদে সদস্য দেশগুলির সম্মতি নিতে হবে৷

এমন কঠিন দায়িত্বের সামনে নতি স্বীকার করতে প্রস্তুত নন ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লিয়েন৷ পুনরুদ্ধার কর্মসূচির জন্য তিনি সদস্য দেশগুলির গ্যারান্টির ভিত্তিতে বাজার থেকে প্রয়োজনীয় মূলধন সংগ্রহ করতে চান৷ সেই অর্থ দিয়েই সদস্য দেশগুলির অর্থনীতি চাঙ্গা করা হবে৷

একটি ক্ষেত্রে ইইউ নেতারা অবশ্য স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ কর্মহীন কর্মী, বিপর্যস্ত কোম্পানি ও ভারাক্রান্ত রাষ্ট্রগুলির সহায়তা করতে ৫৪,০০০ কোটি ইউরোর সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে৷ আগামী জুন মাসের মধ্যেই সেই সহায়তা ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে পৌঁছে দেবার অঙ্গীকার করা হয়েছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এই কর্মসূচির রূপরেখা তুলে ধরেন৷

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ ইইউ নেতাদের সাবধান করে দিয়েছেন৷ তার মতে, ইউরো এলাকার অর্থনীতি ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে৷ ইসিবি সব মিলিয়ে তিন রকম সম্ভাব্য পরিস্থিতি তুলে ধরেছে৷ ইইউ নেতারা ঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে মারাত্মক পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দেন লাগার্দ৷

এমন প্রেক্ষাপটে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরোঁ ইউরোপের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন৷ তার মতে, ইউরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির সহায়তা করতে ‘বাজেটারি ট্রান্সফার' এর বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করতে না পারলে ইউরোপের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে৷ ম্যাকরোঁ বলেন, ইউরোপের কোনো অংশের পতন মেনে নিলে গোটা ইউরোপের পতন ঘটবে৷

ঢাকা টাইমস/২৪এপ্রিল/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ নিহত ২ 
আউয়ালের সঙ্গে নুরুল হুদার ফের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ 
মেহেরপুর সীমান্তে আবারও নারী শিশুসহ ৮ জন পুশইন
২০২৬ সালের পবিত্র রমজান মাস শুরু কবে হতে পারে, জানাল আমিরাত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা