গ্রামেও নেই ঈদের আমেজ

আসাদুজ্জামান, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২০, ১০:৪৪| আপডেট : ২৫ মে ২০২০, ১০:৪৬
অ- অ+

‘এবারের ঈদে আমেজ নেই। ঈদ করতে ঢাকা থেকে লোকজনও কম আসছে। মানুষের মনে আনন্দের চেয়ে শঙ্কাই বেশি’।

বলছিলেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাসিন্দা মোরসালিন। তার মতো, অনেকেরই মনে আনন্দের চেয়ে শঙ্কাই বেশি। করোনাভাইরাসে কোন ফাঁকতালে গ্রামে-গঞ্জে ঢুকে পড়ে সেই ভয়।

একই কথা বলছিলেন, বরিশালের গৌরনদীর বাসিন্দা ফেরদৌস শিকদার। তিনি বলেন, ‘ঈদ করব কী? যেইভাবে মানুষ মরতাছে তাতে ভয়ই বেশি করতাছে’।

মোরসালিন, ফেরদৌসের মতো, বাংলাদেশের ৬৪ হাজার গ্রামের বাসিন্দাদের মনে একই ভয়! ঈদের আমেজ ছাপিয়ে ভয়টাই তাদের কাছে বেশি। কেননা, করোনাভাইরাসে পৃথিবীর সব আনাচ-কানাচে পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশের সকল জেলায়ই করোনা হানা দিয়েছে। শহরে একটু বেশি গ্রামে খানিকটা কম। এই হলো পার্থক্য।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঢেকাতে এবারই সরকার শহরবাসীদের গ্রামে যেতে নিরুসাহিত করেছে। ফলে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে শহরগুলোতে ঈদ উদযাপন করবে। সেখানেও একই শঙ্কা। এই বুঝি শরীরে বাসা বাঁধে করোনা।

মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে। তারপর থেকে সরকারি অফিস বন্ধ। বন্ধ বেশিরভাগ বেসরকারি অফিসও। অনেকেই অফিস কর্মীদের ঘরে বসেই অফিসের কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। এই সুযোগে অনেকেই ঈদের আগেভাগেই শহর ছেড়ে গ্রামে পাড়ি জমিয়েছে। এদেরই একজন কুড়িগ্রামের আয়নাল। পেশায় হিসাবরক্ষক।

আয়নাল বলেন, এবার গ্রামে ঈদ করতে আসিনি, এসেছে করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে। তাই মনে ঈদের আনন্দ জায়গা করতে পারেনি। আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছে। গণপরিবহন না চলায় গ্রামে আসতে পারেনি।’

এদিকে ছুটি পেয়ে আয়নাল গ্রামে মা-বাবার কাছে পৌঁছাতে পারলেও আসতে পারেনি তার বড় ভাই ও দুই বোন। তারা ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ নিয়ে আয়নালের মায়ের আক্ষেপের শেষ নেই।

দিকে গ্রামের বাজারগুলোতে ঈদের আগের দিন যেমন ভিড় দেখা যায় এবার তেমনটা নেই। নিতান্তই দায়সারাভাবে মানুষ কিনছেন সেমাই, চিনি, পোলাওর চাল। যেটুকু না কিনলেই নয়, সেটুকুই কেনা।

গ্রামের ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে ঈদের নামাজ থেকেই। কেননা, প্রতিটি গ্রামেই ঈদ গাঁয়ে নামাজ হয়। এবারই ঈদের নামাজ হয়েছে মসজিদে। তাই ঈদগাহে নামাজে শামিল হওয়ার যে আনন্দ মানুষ পায়, তা এবার একেবারেই নেই।

ঈদে আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে এলে বাড়িতে বাড়িতে খুশির ঢল নামে। অথচ, এবার ঠেকায় পড়ে বা শহরে না থাকতে পেরে গ্রামে এসে হাজির হলে তাকে দেখা হচ্ছে সন্দেহের চোখে। গ্রামের মানুষও সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে চান। রেডিও, টেলিভিশন কিংবা ইন্টারনেটে ঢু মেরে তারাও এতদিনে বুঝে জেনে ফেলেছেন, করোনাভাইরাস কীভাবে ছাড়ায়। তাই তাদেরও বাড়তি সাবধানতা।

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে আজ খুশির ঈদ। কিন্তু এবারের ঈদ গ্রামের মানুষের মনে তেমন একটা খুশির আভা ছড়াতে পারেনি। বরং তারা ভাবছেন যারা করোনার ভয়ে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে আসছেন তারা না গ্রামে করোনা ছড়িয়ে দিয়ে যায়।

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/এজেড/এইচএফ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দলের কেউ অনৈতিক কাজ ও অপরাধ করলে কঠোর ব্যবস্থা: বিএনপির সতর্কতা
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৩, বিপুল সৌদি রিয়াল ও মোটসাইকেল জব্দ
ভাঙনের মুখে চালিতাবুনিয়া, টেকসই বাঁধসহ তিন দাবিতে ঢাকায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
যাত্রাবাড়ী ও মুগদায় ৩ জনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা