করোনা চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ডা. ফাতেমা আক্তার চৌধুরী চমন
  প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০২০, ১৬:৪১
অ- অ+

মনে রাখবেন বর্তমানে জ্বর অথবা কাশি অথবা ডায়েরিয়া অথবা সব একসাথে মানেই কোভিড। আপনার অথবা আপনার আপনজনের কোভিড হবেনা তা ভাবা বোকামি। যারা রোজার ঈদে ঘুরাঘুরি করছে তারা এর মাশুল দিয়ে দিছে খবর নিয়ে দেখিয়েন তাদের প্রিয় মানুষগুলোর করুন মৃত্যুর কথা।

করোনা নিয়ে অভিজ্ঞতা,পর্যবেক্ষণ ব্যক্তিগত পর্যায়েঃ বাসায় জ্বর শুধু একজনের,২-৩ দিন পর আরেকজন সদস্য আক্রান্ত। কি মনে হয়? ধরে নিতে হবে করোনা। জ্বর ছাড়া শুধু গলা ব্যথা,শরীর ব্যথা,ডায়েরিয়া ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে। তারপর কি হয়? টেস্ট করা..

উপসর্গ ২-৩ দিন আর টেস্টের জন্য ২-৩ দিন। এভাবে ১ সপ্তাহ সময় চলে যায়। রেজাল্ট পজিটিভ আসলে আরও মানসিক অশান্তি ,আরও সিদ্ধান্তহীনতা দ্বিতীয় সপ্তাহ ,ফুসফুসে একিউট লাংস ইনজুরি ,৮০% এর উপরে ফুসফুস অকার্যকর ..সাইটোকাইন স্ট্রোম.. রোগী সকল হাসপাতাল ,যেখানে কোভিডের চিকিৎসা হয় না (বেসরকারি পাঁচতারা হাসপাতাল) ঘুরে রাস্তায় মারা যায় অথবা কোভিড হাসপাতালে সব চিকিৎসা পেয়ে মারা যান। প্লাজমা,ফ্লাভিপিরামির,টোকলিজুম্যাব,স্ট্যারয়েড...আইসিইউ।

তাই প্রথম সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ সামান্য সন্দেহ,কোভিড আর দেরি নয়। অনেক ফেক্টর আছে খারাপ হওয়ার জন্য, ১)ভাইরাল লোডঃ যার উপসর্গ নাই,সিম্পল ভাইরাল লোড কম। যার জ্বর,অনেক উপসর্গ ভাইরাল লোড বেশি। ডাক্তার দের সবসময় ভাইরাল লোড বেশি ,আইসিইউের বা ওয়ার্ড ভর্তি কাশি দেওয়া রোগীদের সেবা দানকারী ডাক্তাররা যত ভাইরাল লোড বেশি ,তত উপসর্গ ততই সাইটোকাইনস স্ট্রোম। মৃত্যু হার বেশি

২)পুরুষ রোগীঃ কারণ হয়তো ধুমপান,উনারা নিজেরা না করলেও পেসিভ ধুমপানের স্বীকার হোন সহজেই। ফুসফুস আগে থেকেই দূর্বল|বাংলা ভাষায় বলে মরার উপর খাড়ার ঘা।

৩)অন্যান্য রোগে আক্রান্তঃ ডায়াবেটিস ,প্রেসার,অ্যাজমা,ক্যানসার,হাইপোথাইরোড ইত্যাদি। কেন? কারন তাদেন ইমিউনিটি কম থাকে,রক্তসন্ঞালন প্রক্রিয়া দূর্বল থাকে।

৪)লিম্ফোসাইট কাউন্টঃ বলা হয় লিম্ফোসাইট নরমাল কাউন্ট রোগী রা বেঁচে থাকবে,কমে যাওয়া রোগীর মৃত্যুহার বেশি। লিম্ফোসাইট ফর লাইফ।

৫) দেরি করে চিকিৎসা শুরু করা,১ সপ্তাহ পরঃ যখন সাইটোকাইনস স্ট্রোম শুরু হয়ে যায় ,তখন থামানো অনেক কঠিন হয়ে যায়।

*রোগীর লোকে রা বলে ,জ্বর হয়ে ভালো হয়ে গেছে|আজকে হঠাৎ খারাপ হয়ে গেছে |অথবা উনি ডাক্তার সব জানেন ,বুঝতে বুঝতে খারাপ হয়ে গেছে|

তাই করণীয় কি?

সন্দেহ কোভিড ;প্রয়োজনীয় টেস্ট করা কোভিড টেস্টের পাশাপাশি, CBC,CRP,S.Ferritin,d dimer,FDP,chest X ray ,HRCT chest

চিকিৎসা শুরু করাঃ সেটা নিয়ে এতো চিন্তা কি ?উপসর্গ নিরামক,সাথে অ্যান্টিবায়োটিক ,আইভারমেকটিন,জিংক,ভিটামিন বি,সি,ডি,কালিজিরা (মুসলিম দেশের চিকিৎসায় এটাতে কোলনি স্টি মুলেটিং ড্রাগের মতো মনে করা হচ্ছে,লিম্ফোসাইট কাউন্ট বাড়াবে)

মনিটর করাঃ তাপমাত্রা,অক্সিজেন স্যাচুরেশন,সাইলেন্ট হাইপোক্সিয়ার জন্য ৩০-৪০ স্টেপ দেয়ার পর স্যাচুরেশন দেখা,টেস্ট রিপিট ৩ দিন পর|

ইমিউনিটি ঠিক রাখাঃ এটাই আসল,কোভিড হলে কান্নাকাটি ইমিউনিটি আরও খারাপ হয়|তাই মনে সাহস আর উপরওয়ালা কে ডাকা ,তার উপর ভরষা রাখা|যা হবে ভালো হবে,ইনশাল্লাহ। কোভিড হয়েছে ডায়বেটিস ,প্রেসার অনিয়ন্ত্রিত|ইমিউনিটি আরও ডাওন।

স্টেরয়েড দেওয়া হয় chest imaging এ চ্যান্জ থাকলে,সাইটোকাইন স্ট্রোম কমায় প্লাস পালমোনারি ইডিমা কমায় কিন্তু ডায়বেটিস বেড়ে যায়,সুপার অ্যাডেড ইনফেকশন বেশী হয়|তাই আমরা ৩ -৫ দিন,ভালো অ্যান্টিবায়োটিকসহ এটা দেই। ইনসুলিন নিয়ে ,নিয়মিত মনিটর করে সহজেই এই রোগগুলা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

স্বাস্থ্য সম্মত খাওয়া ,ঘুম,বিশ্রাম..ইমিউনিটি ভালো রাখে। শেষে,আমার বাবা মা বয়সী রা সাথে আমার গুনি স্যার ম্যাডামরা বাসায় থাকেন। সর্বোচ্চ সতর্কতা নিয়ে। রোগীর সেবা মহামারি শেষে করবেন,এখন না। আমাদের গাইড করার লোক কমে যাচ্ছে | আপনারা আমাদের খোলা পুস্তক ,আমরা অনেক স্বার্থপর এইক্ষেত্রে। আপনারা কোভিডে হারায়ে গেলে কোথা থেকে শিখবো।

লেখক: সার্জারি বিশেষজ্ঞ

ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এসকেএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ড. ফয়জুল হককে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
অতিরিক্ত সচিব আরিফুজ্জামানসহ ৩ জনকে ওএসডি
যশোরে পূর্ব শত্রুতার জেরে যুবক খুন 
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অর্ধ বার্ষিক বিজনেস রিভিউ মিটিং অনুষ্ঠিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা