রৌমারীতে বন্যার পানির স্রোতে ব্রিজ দেবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

শওকত আলী মন্ডল, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২০, ২০:৩১

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে গত জুলাই মাসের শুরুতে তৃতীয় দফায় ভয়াবহ বন্যা হয়। প্রবল বৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে আসা পানি ব্রহ্মপুত্র নদ উপচে বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঘমারা ফৌজাদারী বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এরপর লোকালয়ে পানি ঢুকে উপজেলা সদরসহ প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

সেই পানির চাপে বন্দবেড় গ্রামের দক্ষিণ মাথায় ২০০০ সালে নির্মাণকৃত ব্রিজটি পানির স্রোতে দেবে যায়। এতে রৌমারী সদরের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ওই এলাকার মানুষের। তবে এলাকার অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সেই সময় ব্রিজের কাজটি নিম্নমানের হওয়ায় অতি অল্প পানির স্রোতে দেবে যায়। ৪০ ফুট দীর্ঘ ব্রিজটি ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মিত হয়।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বন্দবেড় দক্ষিণ মাথায় আব্দুল খালেকের বাড়ি সংলগ্ন গত ২০ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এ ব্রিজের সংযোগ সড়ক দিয়ে বন্দবেড়, বাঘমারা, চরবন্দবেড় ও পর্দারচরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। রাস্তাটি বন্দবেড় বেড়িবাঁধ থেকে দক্ষিণে ডিসি রাস্তায় গিয়ে মিলিত হয়।

এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রায় ১০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। কৃষকরা তাদের উপার্জিত ফসল এ রাস্তা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে যেতে হয়। বন্দবেড় গ্রামে দুটি চালকল রয়েছে। যার মালামাল এ ব্রিজের উপর দিয়েই আনা-নেয়া হতো।

বন্যার পানির স্রোতে ব্রিজটি ভেঙে চালকল দুটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে চালকলে কর্মরত কয়েকটি পরিবার বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে ওই এলাকার মানুষ অতি কষ্টে অন্যদের জমির ওপর দিয়ে হাটবাজারে যেতে হচ্ছে। এতে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধা আয়নাল হক বলেন, প্রবল বন্যার কারণে ফৌজদারী বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। সেই পানির স্রোতের চাপে এই ব্রিজটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এই এলাকার। ব্রিজটি আবার নির্মাণের জন্য স্থানীয় প্রসাশনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় এলাকাবাসী রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, ব্রিজের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় বন্যার পানির স্রোতে ব্রিজটি দেবে যায়। তিনি বলেন, নিম্নমানের কাজে এলাকাবাসী বাধা দিয়েছিল, কিন্তু নির্মাণকারীরা শুনেনি।

সহকারী শিক্ষক মোখলেছুর রহমান ও আজাদুল হক বলেন, ব্রিজটি ভেঙে আমাদের যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। তাই সরকারের কাছে ফৌজদারী বেড়িবাঁধ ও ব্রিজটি নির্মাণের জন্য অনুরোধ করছি।

চালকল মালিক আবুল কাশেম বলেন, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় ধান ও চালসহ কোন মালামাল আনা নেয়া করতে পারছি না। তাতে আমার চালকল বন্ধ হয়ে গেছে। ব্রিজটি নির্মাণ করা না হলে এলাকার অনেক ক্ষতি হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, বন্যায় উপজেলার অনেক ক্ষতি হয়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্দবেড় গ্রামে একটা ব্রিজ দেবে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :