কুয়েতে মা-মেয়ে খুন, এবার ছেলেকেও হত্যার হুমকি!

কুয়েতে মা মমতা বেগম ও মেয়ে স্বর্ণলতা হত্যার রহস্য এখনো অজানা। নির্মম চাঞ্চল্যকর এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন বাংলাদেশে বসবাসরত পরিবারের একমাত্র সদস্য ছেলে এজাজ আহমেদ। মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে হারানোর পর ১০ বছর আগে হারিয়েছেন ভাইকে। এরপর গত শুক্রবার হঠাৎ মা-বোনকেও হত্যার খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। ভাগ্যের নির্মম খেলায় নিঃসঙ্গ এজাজ যখন হত্যার বিচার চাইছেন, তখন মুঠোফোনে তাকেও হত্যার হুমকি দিল দুর্বৃত্তরা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এজাজের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করে তাকে হুমকি দেয়ার কথা জানান তিনি।
এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে ঢাকার ধামরাই থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন এজাজ।
পৌর সভার তালতলা এলাকার বাসিন্দা এজাজ জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভিন্ন ফেইক নম্বর থেকে একাধিকবার আমাকে কল করে হুমকি দিচ্ছে।
তারা বলেছে, ‘আসামি একটাও ধরতে পারবিনা, আর যাদের ধরবি তারা তোর কাছের লোকজন। আর দুজন শেষ করছি, এখন তোকেও শেষ করব।’
তারা আরো বলেছে, ‘তুই আবোল তাবোল মানুষের নাম দিবি, তুই আরো বেশি বিপদে পড়বি। দুজন তো মরছে, আবোল তাবোল নাম দিলে তুইও মরবি।’
এরপর ওপাশ থেকে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। তবে কে বা কারা কোথায় থেকে ফোন করছে আমি জানি না। তবে তারা অবশ্যই আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।
এজাজ আরো বলেন, ‘কুয়েতে যারা আমার মায়ের পরিচিত ও ওখানকার বাসায় যাওয়া আসা ছিল আমি তাদেরকেই চিনি। আর তাদের ৪-৫জনের কথাই পুলিশকে বলেছি। কারণ তারা কেউই সন্দেহের বাইরে না। এছাড়া দীর্ঘ ২৫ বছর কুয়েতে চাকরি করার সুবাদে মা’র অনেকের সাথেই পরিচয় কিংবা ভালো সম্পর্ক থাকতে পারে। যা আমি জানি না। কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা কুয়েত পুলিশেই উদঘাটন করবে।’
মা-বোন হারানো নিঃসঙ্গ এজাজ উৎকণ্ঠা নিয়ে বলেন, ‘আমি এখন জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ও শঙ্কায় রয়েছি। কেননা কুয়েতের মত দেশে আমার মা-বোনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
এদিকে গত মঙ্গলবার কুয়েতে মা-মেয়ের হত্যার ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত তাদের লাশ দেশে আনা সম্ভব হয়নি। তবে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ ব্যাপারে আইনগত বিষয় সম্পন্নের পর লাশ দেশে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে নিহতের স্বজনদের জানিয়েছেন।
এসব ব্যাপারে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, কুয়েতে মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় ধামরাইয়ে ওই পরিবারের ছেলে এজাজ নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীকে সার্বিক আইনি সহায়তা করা হবে। একই সাথে কুয়েতে নিহত দুজনের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ বছর ধরে কুয়েত সরকারের স্কুল বিভাগে চাকরি করে আসছিলেন ধামরাই পৌরসভার তালতলা এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল মান্নান শিকদারের স্ত্রী মমতা বেগম। দুই বছর আগে একমাত্র মেয়ে স্বর্ণলতাকেও কুয়েতে নিয়ে বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি দেন। এরপর হঠাৎ গত মঙ্গলবার কুয়েতের জেলিব আল সুখা এলাকায় নিজ বাসা থেকে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে সেখানকার পুলিশ।
(ঢাকাটাইমস/৩১আগস্ট/এলএ)

মন্তব্য করুন