র‍্যাবের রাতভর অভিযানে ৬ ভুয়া চিকিৎসকের সাজা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১০:০৭| আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১১:১৭
অ- অ+

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনা এবং অপচিকিৎসার অভিযোগে তিনটি হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে র‍্যাব। অভিযানে ছয়জন ভুয়া চিকিৎসককে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার রাত ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর ও শ্যামলীর বাবর রোড থেকে শুরু হয় এই অভিযান। নেতৃত্ব দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। তিনি জানান, মোহাম্মদপুর ও শ্যামলীর মক্কা-মদিনা হাসপাতাল, নূরজাহান জেনারেল হাসপাতাল, ক্রিসেন্ট হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে ভুয়া চিকিৎসক ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। র‍্যাব-২ ও ডিজি হেলথ প্রতিনিধির সহযোগিতায় টাস্কফোর্স অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।

র‍্যাবের অভিযানে আটক করা হয় ক্রিসেন্ট হাসপাতালের মালিক আবুল হোসেনকে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস আবুল হোসেন হাসপাতালটি পরিচালনা করতেন। এমনকি রোগীর এক্স-রে দেখে অপারেশনের সিদ্ধান্ত দিতেন তিনি নিজেই। ৫০ বছর বয়সী আবুল হোসেন হাসপাতালটির ডাক্তারও। সরকারি হাসপাতাল থেকে তার কাছে রোগী ভাগিয়ে আনার জন্য তিনি দালাল নিয়োগ করেছেন। চিকিৎসক না হয়েও রোগীদের ভাঙা হাত-পায়ের এক্স-রে দেখে অপারেশনের সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই দেন। এছাড়াও ক্রিসেন্ট হাসপাতালের অনুমোদনের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে আরও চার মাস আগে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আবুল হোসেনকে এক বছরের কারাদণ্ড ও হাসপাতালটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

রাতভর পাঁচ ঘণ্টার অভিযানে মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকায় আরও দুটি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও র‍্যাব-২ এর সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

অভিযান শেষে পলাশ কুমার বসু বলেন, রাজধানীর শ্যামলী ও মোহাম্মদপুর থানার বাবর রোডে হাসপাতালে দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে এসে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দেয়। তারা রোগী আনার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া।

র‍্যাবের এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষ আসে চিকিৎসা নিতে। তারা বেশিরভাগই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। তারাই বেশি এই সব দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন।

তিনি আরও বলেন, অভিযানের শুরুতেই মক্কা-মদিনা হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। সেখানে পরিচালক নূর নবীর কোনও ধরনের চিকিৎসা প্রদানের সনদ বা অনুমোদন নেই। তিনি তার রুমে বসে রোগী দেখেন এবং তাদের ব্যবস্থাপত্র দেন। হাত ভাঙাসহ বিভিন্ন গুরুতর আহত যে রোগীরা আসছেন তাদেরকে অপারেশন করার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। যা তিনি কোনোভাবেই দিতে পারেন না।

এ অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাসপাতালটির পরিচালক নূর নবীকে এক বছরের কারাদণ্ডসহ আনোয়ার হোসেন কালু ও তার সহযোগী আব্দুর রশিদকে ৬ মাস করে সাজা প্রদান করা হয়। সেসঙ্গে মক্কা-মদিনা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

পলাশ কুমার বসু বলেন, নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালের একটি চক্র সরকারি হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে আনেন। উন্নত চিকিৎসা দেয়ার কথা বললেও অপরিষ্কার ও ফ্লোরে রক্তমাখা কাপড় ও ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে অপারেশন করানো হতো। এই অভিযোগে হাসপাতালটির পরিচালক বাবুল হোসেনকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ওয়ার্ড বয় যার বিরুদ্ধে অপারেশনের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি হাসপাতালটিকে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

র‍্যাবের এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, আমরা চাই মানুষের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে এমন এইচএসসি পাস চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে প্রতারিত না হন। এমন অপচিকিৎসা মানুষের অর্থ ও জীবনের জন্য খুবই বিপজ্জনক। সিলগালা করা হয়েছে জনস্বার্থে। সিলগালা করে পুরো প্রতিবেদনটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আছেন তার মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে, যাতে করে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/এআর/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে Industry Academia Collaboration Summit-2025 শুরু
নির্বাচনি প্রতীক: নৌকা বাদ ও শাপলা তালিকাভুক্ত করার দাবি এনসিপি’র
কুষ্টিয়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ফটকে ময়লা ফেলে কর্মবিরতি
জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন, সিদ্ধান্তে একমত রাজনৈতিক দলগুলো
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা