বর্ণ ফাইটার না গ্রোন ফাইটার?

সাদিয়া নাসরিন
 | প্রকাশিত : ০৪ মার্চ ২০২১, ১৯:৩২

একুশের প্রথম প্রহরে আমরা ফ্যামিলি মিটিং করলাম। এছাড়া আর সময় হলো না। গত তিনমাস মিটিং হয়নি। আমার ইয়ার এন্ডিং ঝামেলা, ভাইয়ের বিয়ে, নতুন প্রজেক্ট লঞ্চিং সব মিলিয়ে হয়নি। সবারই এজেন্ডা জমেছিল। সুতরাং মধ্যরাতই সই!

যাইহোক, এবার মিটিংয়ে আমার আলোচনার বিষয় ছিল ‘বর্ণ ফাইটার ভার্সেস গ্রোন ফাইটার’। আমি বাসায় ফেরার পথে গাড়ি চালাতে চালাতে একটা হাইপোথেসিস দাঁড় করিয়ে এসেছি। যদিও একান্তই আমার নিজস্ব হাইপোথেসিস, তবুও এই অংশটুকু ডকুমেন্টেড রাখার জন্য ভিডিও করেছি। যতটুকু মনে আছে লিখেও রাখলাম। কারো কাজে লাগলেও লাগতে পারে।

বর্ণ ফাইটার বলতে আমার কাছে কিছু নেই। অথবা এভাবেও বলা যায়, এই পৃথিবীর প্রত্যেক প্রাণিই বর্ণ ফাইটার। কারণ, যে প্রসেসে একটি প্রাণের জন্ম হয় সেটাই সবচে বড় ফাইট। প্রতিটি মানুষই বর্ণ ফাইটার, কারণ প্রতিটি মানুষই নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে চায়, কোনো মানুষই অপ্রেসন মানতে চায় না। অথচ লক্ষ কোটি মানুষ এই পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় মেনে নিতে নিতে। লক্ষ কোটি মানুষ এবোলিশ হয়ে যায় শুধু যুদ্ধের ময়দানে টিকতে না পেরে বা যোদ্ধা হয়ে ওঠতে না পেরে।

সুতরাং, আমার কাছে ফাইটার আসলে হয়ে ওঠার বিষয়, গ্রুমিংয়ের বিষয়। একজন মানুষ তখনি যোদ্ধা হতে পারেন যখন তিনি যুদ্ধের ময়দানে নামার শক্তি অর্জন করতে পারেন। এই যোদ্ধা হয়ে ওঠার শক্তি অর্জন করার প্রক্রিয়াকে আমি এভাবে ডেসক্রাইভ করি: FIGHTHER=POWER=5C (Courage+Capacity+Cost+Connection+Communication)। একটু ডিটেইল করি।

একজন যোদ্ধার শক্তির প্রথম উৎস হলো সাহস। এই লড়াইটা আমি করব এবং শেষ অবধি লড়াইয়ের ময়দানে থাকব। আমার চারপাশ থেকে শত্রুর ছুঁড়ে দেয়া বিষাক্ত তীর ছুটে আসবে, বন্ধুবেশি ছায়া শত্রুরা ফণা তুলে ছোবল দেবে, বাবা অপমান করবে, মা ঘৃণা করবে, পরিবার প্রশ্নবিদ্ধ করবে, সমাজ আঙ্গুল তুলবে, সন্তান কষ্ট পাবে, সঙ্গী সন্দেহ করবে...তবুও আমি অবিচল থাকব আমার যুদ্ধের ময়দানে। কারণ আমি জানি, যুদ্ধজয়ের জন্য যা যা কষ্ট স্বীকার করতে হয় তা করার মতো সাহস আমার আছে। এটাই হলো যুদ্ধের মুল ফাউন্ডেশন।

এরপরের ধাপে আছে নিজের সক্ষমতা বৃদ্ধি। লড়াইয়ের ময়দানে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরা চিহ্নিত শত্রুদের এবং বন্ধুবেশি ছায়া শত্রুদের মোকাবিলা করার মতো স্থিতি, বুদ্ধি, কৌশল এসবের জন্য নিজের সক্ষমতা বাড়াতে হয়। শারীরিক সক্ষমতা, মানসিক সক্ষমতা, রাজনৈতিক সক্ষমতা, আর্থিক সক্ষমতা, সামাজিক সক্ষমতা, রিচুয়াল বা ধর্মীয় সক্ষমতা এসব নিয়েই একজন যোদ্ধা লড়াইয়ের ময়দানে প্রবেশ করেন।

তৃতীয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শক্তির উৎসটি হলো অর্থ। এটাই সত্য। সব আছে অথচ অর্থের অভাবে রসদ যোগাতে না পারলে যুদ্ধের পরিকল্পনাই তুমি করতে পারবে না। আর যাইহোক, স্বামী বা পিতা বা মা বা স্ত্রী কারো কোলে বসে বা কারো পকেট কেটে তুমি তোমার নিজস্ব লড়াই করতে পারবে না। অতি জোর কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারবে। সুতরাং একজন যোদ্ধার নিজস্ব পর্যাপ্ত, আই রিপিট, ‘পর্যাপ্ত’ অর্থের নিশ্চয়তা থাকা ইজ অ্যা মাস্ট।

এর পরের ধাপে যে উপাদান থেকে একজন যোদ্ধাকে শক্তি যোগাবে তা হলো কানেকশন বা সংযোগ। অর্থাৎ, টার্গেট পয়েন্ট চেনা। তোমার অর্থ আছে কিন্তু তুমি জানোনা না কোথায় সেই অর্থ খরচ করবে, তোমার সব ধরনের সক্ষমতা আছে কিন্তু তুমি জানোনা সেই সক্ষমতা কোন কাজে লাগাবে, এই অর্থ বা সক্ষমতা তোমার কোন কাজে আসবেনা।

এবার ধরো, তোমার যথেষ্ট কানেকশন আছে কিন্তু যোগাযোগ নেই, সেই কানেকশন তোমার দরকারে রেসপন্স করবে না। সুতরাং কানেকটিভিটির জন্য কমিউনিকেশন ইজ অ্যা মাস্ট স্কিল এন্ড নেসেসিটি এবং দ্য লাস্ট বাট নট লিস্ট ইজ, একজন যোদ্ধা হয়ে ওঠার জন্য যে মন্ত্র জপতে হয় তা হলো,

যে পথে যেতে হবে সে পথে তুমি একা

নয়নে আঁধার রবে, ধেয়ানে আলোর রেখা”

লেখক: কলামিস্ট

ঢাকাটাইমস/৪মার্চ/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :