প্রতিবেশীর প্রাচীরে ‘অবরুদ্ধ চার পরিবার’

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ
 | প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০২১, ২২:৩২

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার দুল্গা ইউনিয়নে কুড়িপাড়া গ্রামে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে পাঁচ দিন ধরে চারটি পরিবার বাড়ি থেকে বের হতে না পেরে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিনযাপন করছে।

উপজেলার দুল্গা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ সরকারের মেয়ে সালমা খাতুন তার স্বামী সেলিম মিয়াকে নিয়ে বিয়ের পর থেকেই বাবার দেওয়া ওয়ারিশ জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। তার প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এ ভেবে সালমা খাতুন সম্প্রতি আধা শতাংশ জমি রাস্তার জন্য বিক্রি করেন আব্দুর রাজ্জাকের কাছে। এতেই ক্ষেপে যায় সালমার বাড়ির সঙ্গেই ‘বিএসসি’ নামে একটি জামে মসজিদ কমিটি। তারা সালমাকে তার বাড়িভিটা মসজিদের জন্য বিক্রি করার জন্য চাপ দেয়। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় সালমার চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় সালমা ও তার পরিবারের লোকজনের বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তায় ইটের প্রাচীর নির্মাণ করে চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় মসজিদ কমিটি। এর পাশাপাশি সালমার প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাকের সামনে ইটের দেয়াল তোলে বাড়িতে ঢোকার পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও আরও দুইটি পরিবারের রাস্তাও বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ রয়ছে। ফলে ওই চার পরিবার প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে আছে।

অবরুদ্ধ হয়ে পড়া আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার বাড়িতে ঢোকার জন্য সালমার কাছ থেকে জমি কেনায় মসজিদ কমিটি ক্ষুব্ধ হয়ে তার চলাচলের পথও ইটের দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।

সালমার চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের না জানিয়ে সালমা প্রতিবেশী রাজ্জাকের কাছে জমি বিক্রি করে দিয়েছে। এ অবস্থায় আমি আমার জমিতে সীমানা প্রাচীর করেছি। তাতে তাদের চলাচলে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে আমার কি করণীয় আছে।

মসজিদ কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান মাসুদ তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন, আমরা কারও রাস্তা বন্ধ করিনি। মসজিদের ইমামের বাসস্থানের প্রয়োজনে সালমার জায়গা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সালমা তা দেয়নি। এ অবস্থায় রফিকুল ইসলাম তার জায়গায় প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। এখানে আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে অহেতুক।

তবে স্থানীয় বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, এভাবে যদি ক্ষমতাধরেরা আইনকানুন ও প্রশাসনকে উপেক্ষা করে জবরদখল চালিয়ে যেতে থাকেন, তাহলে দুর্বল ও ক্ষমতাহীন মানুষ কীভাবে গ্রামসমাজে বাস করবে। জোর যার মুল্লুক তার সংস্কৃতির অবসান হওয়া দরকার। তাই অবিলম্বে ওই চার পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি প্রাচীর ভেঙে খুলে দেয়ার দাবি জানান। তারা স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

দুল্গা ইউপি চেয়ারম্যান হুসেন আলী বলেন, এ বিষয়টি সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। আশা করছি, শিগগির এর একটা সঠিক সমাধান হবে।

মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, কেউ কারও রাস্তা বন্ধ করার অধিকার রাখে না। তারপরও গায়ের জোরে সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে এমনটি প্রমানিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :