খুব সকালে তিন ঘন্টার জন্য রমনা পার্ক খোলার আবেদন

কোনটা ভালো? শঙ্কাহীন,স্বাস্থ্যসম্মত শরীরচর্চা ও মুক্ত বায়ু সেবন নাকি মেইন রোডে দাঁড়িয়ে/শুয়ে শরীরচর্চা? শেষ ১০/১২ বছর একটা বিষয় খুব দায়িত্ব সহকারে পালন করে আসছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। দেশে একটা পটকা ফুটলে, হরতাল হলে রমনাপার্ক বন্ধ। কোথাও মিছিল, কেউ গ্রেপ্তার, রাজনৈতিক ডামাডোল, কোথাও কোনো দুর্ঘটনা সব কিছুতেই সমাধানের বৃহৎ কর্ম-পরিকল্পনার হলো, রমনা বন্ধ। কেন?
এবার নতুন সংযোজন করোনা। ‘এমনিতেই নাচুনি বুড়ি, তাতে পড়ছে ঢোলে বাড়ি’! আর পাই কে! গত বছর করোনাকে কারণ ধরে, প্রায় ৭ মাস, এই ঢাকা শহরের একমাত্র শরীর চর্চার জায়গাটা বন্ধ রাখল। অথচ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাপত্রে কিন্তু অন্যতম একটা বিষয় ছিল শরীর চর্চা, দম বাড়ানো, যাদের ডায়বেটিস আছে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখা ইত্যাদি!
ভোর সাড়ে পাঁচটায় যারা সব আরাম ফেলে রমনায় ছুটে যায়। তারা কেউই বিনোদন করতে যায় না। কারোরই নিজের অফিস অথবা কাজে যোগ দেয়ার আগে ঐ ভোরে কোনো ফুরসত পাই না দুদন্ড বসার! শুধুই নিজেকে একটু সুস্থ রাখার চেষ্টা মাত্র!
যারা এই পার্ক বন্ধের দায়িত্বটি আনন্দ নিয়ে পালন করছেন, তারা কি এই সত্যগুলো ভাবেন? তারা কি কোনদিন রমনার মাটিতে পা ফেলে দেখেছেন, এখানে রাজনৈতিক সমস্যা,অথবা রোগ জরা নাই। আছে এ সবের সমাধান!
আপনারা এ বন্ধের তালা ঝুলিয়ে সফল হচ্ছেন কেন জানেন? এখানে ভোরবেলা আপাদমস্তক ভদ্র এবং নির্বিরোধ লোকজন আসে, শুধুই শারিরীক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য! কোনো টেন্ডারবাজী বা নমিনেশনের জন্য নয়। সেটা হলে তো কত রক্তপাত যে হতো, তার হিসাব নাই।
আজ করোনা বলে নয়, যে কোনো তুচ্ছ কারণে আপনারা তালা ঝুলিয়ে দেন,আর এই ভদ্রলোকগুলো বদ্ধ গেটের বাইরের রাস্তায় জগিং, ব্রিদিং, যোগব্যায়ামে বসে যায়। তাদের আসতেই হয়, কারণ তাদের কারোই মিনিস্টার এ্যাপারমেন্ট, বা স্টাফ কোয়াটারের বাহাদুরি নাই।
আমাদের বিজ্ঞ এবং সম্মানিত কর্তৃপক্ষের সুবিবেচনা প্রার্থনা করছি। পার্কে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার কারণে যে মানুষগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুল সড়কে দাঁড়িয়ে জগিং করেছে, সেদিকে বিবেচ্য দৃষ্টিপাত করবেন। খুব সকালে অন্তত ২/৩ ঘন্টার জন্য পার্ক খোলা রাখার ব্যবস্থাটি করবেন।
স্যার কি কখনো ভোর দেখেছেন? পার্কটি খুললে অনুগ্রহ করে একদিন ভোরের সুর্যোদয় দেখতে আসবেন। এই সুর্যোদয়/সুর্যাস্তটুকু এখনও সার্বজনীন আছে। বিশ্বাস করেন স্যার, এখানে অস্বাস্থ্যকর কিচ্ছু নাই। কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও নেই! সবাই নিজ দায়িত্ব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে! আমি নিশ্চিত, আপনার অনেক ভালো লাগবে।
লেখক: অভিনয়শিল্পী
ঢাকাটাইমস/৮জুলাই/এসকেএস

মন্তব্য করুন