ঘরে দই বানানোর সহজ উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট ২০২১, ০৯:৫৭

দই খেতে কে না ভালোবাসে। আমাদের দেশে বগুড়া দই বিখ্যাত। তবে ঘরে পাতা দই অনেকের প্রিয়। দইয়ের পুষ্টির মান অনেক এবং এটির উচ্চ ক্যালসিয়াম উপাদান, প্রোটিন এবং পটাসিয়াম, এর সর্বাধিক উপকারী উপাদানগুলো হল লাইভ ব্যাকটেরিয়া।

এই অণুজীবগুলোকে প্রোবায়োটিক বলা হয়। যা ‘ভালো ব্যাকটেরিয়া’ নামে পরিচিত। প্রোবায়োটিকগুলো খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে, ইমিউনি সিস্টেমকে সমর্থন করে এবং একটি স্বাস্থ্যকর হজমশক্তি তৈরি করে। জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ দই-ই স্বাস্থ্যপ্রদ।

দইয়ে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম থাকে, যা অস্থিক্ষয় বা ওস্টিওপরোসিস রোধ করে। দই প্রোটিনেরও ভালো উৎস। দইয়ে যথেষ্ট পরিমাণে বি-ভিটামিন, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম উপাদান থাকে, যা স্বাস্থ্যকর।

বাড়িতে দই জমানোর চেষ্টা করেন প্রায় সকলেই। তবে অনেকেই সঠিক পদ্ধতিতে তা জমিয়ে উঠতে পারেন না। আবার কোনওক্রমে জমাতে পারেলও স্বাদে ভালো হয় না।

দই পাতার জন্য গরম দুধে দইবীজ মেশানো উচিত। তবে অনেক সময় দই পাতার জন্য সঠিক সময় দই বীজ পাওয়া যায় না। প্রায়ই এই সমস্ত সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকলে এখানে এমনই কিছু টিপস দেওয়া রইল, যা মেনে চললে দম্বল ছাড়াই সুস্বাদু দই পাততে পারবেন।

কাঁচামরিচ

দইবীজ ছাড়া দই পাতার সবচেয়ে ভালো উপায় হল কাঁচামরিচ। কাঁচামরিচের সাহায্যে কীভাবে দই জমাবেন—

উপকরণ

কাঁচামরিচ: ১টি

ফুল ক্রিম দুধ: ১/২ কাপ ফুটিয়ে রাখা

পদ্ধতি

স্টেপ

এ ক্ষেত্রে ডাঁটি-সহ গোটা কাঁচা লঙ্কা ব্যবহার করতে হবে। ভুলেও কাঁচামরিচের ডাঁটি ছাড়াবেন না। কারণ কাঁচামরিচের উপস্থিত উৎসেচকই দই জমাতে সাহায্য করবে।

স্টেপ

এবার ফুটিয়ে রাখা দুধটিকে ঈষদুষ্ণ গরম করে নিন। কাঁচের পাত্রে এই দুধ ঢেলে নিন। দুধের মধ্যে কাঁচা লঙ্কা ডুবিয়ে কোনও আর্দ্র স্থানে রেখে দিন।

স্টেপ

১০ থেকে ১২ ঘণ্টার জন্য এ ভাবেই ঢাকা দিয়ে ওই দুধ রেখে দিতে হবে। এভাবে দই পাতার জন্য প্রয়োজনীয় দই জমে যাবে।

স্টেপ

এভাবে অন্য দুধে দই পাততে পারবেন। তবে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে পাতা দইটিকে শুধু মাত্র জমানোর জন্যই ব্যবহার করুন। এর সাহায্যে পাতা দই শুদ্ধ ও টক হবে।

লেবু

কাঁচামরিচের মতোই লেবুর সাহায্যে পাতা দই দিয়ে অন্য দই জমিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

উপকরণ

আধ কাপ ফুল ক্রিম দুধ।

১ চামচ লেবুর রস।

পদ্ধতি

স্টেপ

প্রথমে অল্প আঁচে ভালো ভাবে দুধ ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার দুধ ঠান্ডা করুন। ঈষদুষ্ণ হয়ে পড়লে এতে লেবুর রস মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন।

স্টেপ

১০-১২ ঘণ্টা এ ভাবে ছেড়ে দিলেই দইবীজ তৈরি হয়ে যাবে। তার পর লেবুর রস দিয়ে পাতা দই ব্যবহার করে সকলের খাওয়ার জন্য দই পাতুন।

স্টেপ

উল্লেখ্য বাড়িতে পাতা দইয়ের দইবীজ ২ চা চামচের বেশি ব্যবহার করবেন না। সর্বাধিক ২ চা চামচের দইবীজ ব্যবহার করে খাওয়ার জন্য দই পাতুন। দই ভালোভাবে জমে গেলে তা ফ্রিজে রেখে দেবেন।

ভিনেগারের দইবীজ

একটি মোটা তলযুক্ত প্যান চুলায় বসিয়ে ভেতরে স্ট্যান্ড বসান। স্ট্যান্ডের অপরে একটি মাঝারি সাইজে তোয়ালে দুই ভাঁজ করে রাখুন। প্যান ধেকে দিন ঢাকনা দিয়ে। ঢাকনায় কোনও ছিদ্র থাকলে সেটা কাগজ বা টিস্যু দিয়ে বন্ধ করে দিন। চুলার সর্বনিম্ন আঁচে ১০ মিনিটের জম্য রেখে দিন এভাবে।

আধা কাপ গুঁড়া দুধ নিন বাটিতে। ১/৪ কাপ তরল দুধ দিয়ে মিশিয়ে নিন ভালো করে। ৩ টেবিল চামচ ভিনেগার দিন। ভিনেগার না থাকলে লেবুর রস দিন। অল্প অল্প করে মেশাতে হবে। মাটির ছোট পাত্র বা কাচের বাটিতে মিশ্রণটি ঢেলে দিন। ফয়েল পেপার অথবা সুতির কাপড় দিয়ে পাত্র ঢেকে আগে থেকে চুলায় রেখে দেওয়া স্ট্যান্ডে বসিয়ে তোয়ালে দিয়ে মুড়ে দিন। একদম কম আঁচে ১৫ মিনিট রেখে দিন। জমে যাবে দই। ঠাণ্ডা হলে ১ ঘণ্টার জন্য নরমাল ফ্রিজে রেখে দিন। এই দইয়ের বীজ এক মাস পর্যন্ত ফ্রিজে রেখে দিতে পারবেন।

দইবীজ থেকে দই তৈরি

একটি চালুনিতে দেড় কাপ দইয়ের বীজ নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এতে বাড়তি পানি ঝরে যাবে। প্যানে ১ টেবিল চামচ চিনি দিয়ে ক্যারামেল বানিয়ে নিন। চিনি গলে সোনালি রঙ হয়ে গেলে সামান্য দুধ দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিন। দুই লিটার দুধ চুলায় ফুটিয়ে নিন। ছয় থেকে সাতবার বলক তুলবেন। স্বাদ মতো চিনি মিশিয়ে নিন দুধে। ক্যারামেলমিশ্রিত দুধ দিয়ে আরও দুইবার বলক তুলে দিন। দুধ নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। একেবারে ঠাণ্ডা করবেন না। কুসুম গরম থাকা অবস্থায় বসাতে হবে দই।

দইবীজ ভালো করে ফেটে নিন। এবার অল্প অল্প করে কুসুম গরম দুধ মিশিয়ে নিন। যে পাত্রে বসাবেন সেটাতে ঢেলে নিন দুধের মিশ্রণ। চুলায় দই তৈরি করতে দইবীজের প্রিপারেশনেই বসান। দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে দই। চাইলে ওভেনে বসাতে পারেন। ৫০ থেকে ৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগবে দই জমতে।

(ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :