চট্টগ্রামে ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত মুশতারী শফী, দাফন দুপুরে

বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদজায়া, সাহিত্যিক ও উদীচী চট্টগ্রামের সভাপতি বেগম মুশতারী শফীর মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে শোকমঞ্চ।
বুধবার সকালে মরদেহ আনা হয় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেবে সিএমপির একটি চৌকস দল।
মুশতারী শফীর স্মৃতিচারণ করেন কবি আবুল মোমেন, চবি উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার, অধ্যাপক বেণু কুমার চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বালাগাত উল্লাহ, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, প্রমার সভাপতি রাশেদ হাসান।
মরদেহে শ্রদ্ধা জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবসার, নারীনেত্রী নূরজাহান খান, প্রফেসর রীতা দত্ত, নাট্যব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, লেখিকা আনোয়ারা আলম, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, ডা. চন্দন দাশ, শীলা দাশগুপ্ত, কবি আশীষ সেন, রাশেদ হাসান, রমেন দাশগুপ্ত, প্রণব চৌধুরী প্রমুখ।
উদীচী, কমিউনিস্ট পার্টি, সনাক, বোধন, প্রমা, খেলাঘর, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মহিলা কলেজ, বাসদ, জেলা শিল্পকলা, সিআরবি রক্ষা মঞ্চ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, নারী যোগাযোগ কেন্দ্র, ফুলকি, বিটা, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, যুব ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর নগরীর জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
গত সোমবার বিকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান বেগম মুশতারী শফী।
কিডনি ও রক্তে সংক্রমণসহ নানা জটিলতার জন্য ২ ডিসেম্বর তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তির পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে মেয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। ১৪ ডিসেম্বর শারীরিক অবস্থার আবার অবনতি হলে সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়ার হয়। চিকিৎসকেরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার মারা যান তিনি।
বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত বেগম মুশতারী নারীনেত্রী ও শব্দসৈনিক। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ এপ্রিল তার স্বামী চিকিৎসক মোহাম্মদ শফী ও ছোট ভাই এহসানুল হক আনসারীকে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন বেগম মুশতারী শফি। মুক্তিযুদ্ধে অনন্য ভূমিকার জন্য ২০১৬ সালে তাকে ফেলোশিপ দেয় বাংলা একাডেমি। ২০২০ সালে পেয়েছেন বেগম রোকেয়া পদক। চট্টগ্রামে নারী অধিকার আদায় ও সুরক্ষার জন্য দীর্ঘদিন কাজ করেছেন মুশতারী শফী।
(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/এমআর)

মন্তব্য করুন