দাম কমে যাওয়ায় হতাশ রাজবাড়ীর পানচাষিরা

এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী
  প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:২১
অ- অ+

রাজবাড়ী জেলার মাটি পান চাষে উপযোগী ও স্বাদ ভালো হওয়ায় মিষ্টি পানের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে চাষিরা দিনদিন পানে চাষে আগ্রহী হয়েছিল। তবে করোনার প্রভাবে পান বিদেশে রপ্তানি বন্ধ হয়ে পড়া ও দাম কম থাকার কারণে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা। এতে অনেক চাষি পান বরজ ভেঙে অন্যচাষে ফসল চাষে ঝুঁকছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলাতে ৮৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি পান ও সাচি পানের আবাদ করা হয়েছে। ৬৫৮টি মিষ্টি পানের বরজ, ১৫৬টি সাচি পান বরজসহ ৮১৪টি বরজে চাষ ৮৮ হেক্টর জমিতে পানের চাষ।

মিষ্টি পান চাষে উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত বালিয়াকান্দি উপজেলা। এ অঞ্চলের পানের সুখ্যাতি বহু পুরনো। এখানে সাধারনত দুই জাতের পান উৎপাদন হয়। মিষ্টি পান আর সাচি পান। এখানকার মিষ্টি পান চাহিদা মিটিয়ে ৮টি দেশে রপ্তানি করা হতো। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে প্রতি বছর কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। অনেক সময় পান চাষিদের বেকায়দায় পড়তে হয়। কারণ রোগের বিষয়ে কৃষি বিভাগে নেই কোন পরামর্শের সুযোগ।

পান চাষি গনেশ মিত্র বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চরআড়কান্দি, ইলিশকোল, স্বর্প বেতেঙ্গা, খালকুলা, বালিয়াকান্দি, বহরপুর, যদুপুর এলাকায় ব্যাপক পানের আবাদ হয়। তাদের পূর্বপুরুষের আমল থেকে পানের চাষ করে আসছেন। পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও পান চাষ করছে। তবে এখন পানের দাম একেবারেই কম হওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। ৮০টি পান আগে ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হতো সেই পান এখন মাত্র ৪-৫ টাকা দাম। তবে বাজারে একেকটি পান কিনে খেতে গেলে ঠিকই ৫ টাকা দিয়েই কিনে খেতে হয়। তাহলে আমাদের অবস্থা কি আপনারাই বোঝেন।

বাবাকে পানের বরজে সাহায্য করতে আসা কলেজ ছাত্র সুজন মিত্র বলেন, এ অঞ্চলের সাচি ও মিষ্টি পান প্রচুর জন্মে। মিষ্টি পান রাজবাড়ী জেলাসহ পাশের জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া রপ্তানি করা হতো। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো। করোনার কারণে বিদেশে পান রপ্তানি বন্ধ হয়ে পড়েছে। বাজারে পানের দাম নেই। এ কারণে আমরা পান চাষ বাদ দিয়ে অন্য চাষে ঝুঁকছি।

পান চাষি আলোক রাহা বলেন, করোনার প্রভাবের কারণে পানে লোকসান গুনতে হয়। এবছর লাভের আশা করছিলাম। তবে কয়েকদিনের ঘন বৃষ্টির কারণে ও পানের দাম নেই। কৃষি কর্মকর্তারাও কোন পরামর্শ দিতে পারে না। তাই বিষয়টি নিয়ে গবেষণার দাবি জানানো হয়। আগে বিদেশে প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর পান বিদেশে পাঠাতে পারছি না। দাম না থাকার কারণে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে।

পান চাষি কার্তিক রাহা, পংকজ ইন্দ্র বলেন, অর্থকরী ফসল পান হলেও তাদের নেই কোন সহযোগিতা। সরকারিভাবে তাদেরকে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে পান চাষকে আরো লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার মিষ্টি পান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ৮টি দেশে রপ্তানি করা হতো। এখন রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তবে পান রপ্তানি করতে চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। পান চাষিদের সব সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ প্রদান করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
“চাঁদাবাজ যতই প্রভাবশালী হোক, পার পাবে না”
গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
আদাবরে সালিস বৈঠকে গুলি: নিহত ১, অস্ত্রসহ আটক ২
বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক এনসিপির
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা