সাংবাদিক হাবিব স্মরণ: তার হাসিমুখ সবাইকে মুগ্ধ করতো
তার মানবিক গুণাগুণ ও চারিত্রিক মাধুর্য ছিল অনন্য। তার হাসিমুখ সবাইকে মুগ্ধ করতো। এমনই বক্তব্য উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, দৈনিক সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার ও সাংবাদিক নেতা হাবীবুর রহমানের স্মরণসভায়।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে হাবিবের স্মৃতিচারণে বক্তব্য দেন তার বন্ধু, সহপাঠী, সহকর্মী ও শিক্ষকরা।
ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের ২০০৬-০৭ সেশনের শিক্ষার্থীদের আয়োজিত এই স্মরণসভায় হাবীবুর রহমানের পরিবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ, প্রাক্তন ও বর্তমান সাংবাদিকগণ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রাক্তন ও বর্তমান নেতাকর্মীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মরণসভায় হাবীবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ বলেন, হাবীবকে আমি ক্লাসরুমে পেয়েছি। সেমিস্টার সিস্টেমের ওরা প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার হাসিমুখ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাইকে মুগ্ধ করতো। বঙ্গবন্ধু হলের প্রশাসনিক দায়িত্বপালনের সময় আমি তাকে দেখেছি অসুস্থ শিক্ষার্থীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করতে। তার যে মানবিক গুনাগুন ও চারিত্রিক মাধুর্য ছিল সেটা অনন্য। আজকে শিক্ষক হয়ে শিক্ষার্থীর স্মৃতিচারণ করতে হচ্ছে, এটা খুবই কষ্টদায়ক।
স্মরণসভায় হাবীবুর রহমানের বাবা পেয়ার মিয়া বলেন, আমার বড়ছেলে হাবীবকে আমি আমার সামর্থ্য দিয়ে কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েছি। আশা ছিলো ছেলে বড় হয়ে আমাদের দেখভাল করবে, অসুস্থ হলে চিকিৎসা করাবে, মারা গেলে আমার জানাজায় কথা বলবে। এখন আমাকে ছেলের লাশ কাঁধে নিতে হয়েছে। এরকম কষ্ট যাতে আপনাদের কারো না হয়। আপনাদের সাথে দীর্ঘদিনের পথচলায় আমার ছেলে যদি কোনো কষ্ট দিয়ে থাকে, আমি তার পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা একজন দেশপ্রেমিক সাংবাদিককে হারালাম, যিনি স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে তার সাংবাদিকতার জায়গায় কাজ করেছেন। আমরা হাবীব ভাইয়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, হাবীবুর রহমান আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নেতা ছিলেন। সাবেক হওয়ার পরও তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে ছিলেন। আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
গত ১৮ জানুয়ারি গভীর রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল সিদ্দিক মাস্টারের ঢাল নামক এলাকায় হাবীবুর রহমানের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনাজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করলেও হাবীবুর রহমানের পরিবারের সদস্য, সহপাঠী ও সহকর্মীরা তার মৃত্যুকে রহস্যজনক উল্লেখ্য করে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেন।
ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/এমআর