ঝুঁকিতে দেশীয় চা শিল্পের প্রবৃদ্ধি: টি অ্যাসোসিয়েশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট ২০২২, ২১:৪৬
অ- অ+

শ্রমিক কল্যাণমুখী বাংলাদেশের চা শিল্প যখন বিশ্ববাজারে প্রভাব বিস্তার করছে তখন আন্দোলনের নামে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বাজারকে ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন উদ্যোক্তারা।

চা বাগানে শ্রমের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি করা হলেও একজন শ্রমিক দৈনিক প্রায় ৪০০ টাকা সমপরিমান সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন।

প্রত্যক্ষ সুবিধার মধ্যে দৈনিক নগদ মজুরি ছাড়াও ওভারটাইম, বার্ষিক ছুটি ভাতা, উৎসব ছুটি ভাতা, অসুস্থজনিত ছুটি ভাতা, ভবিষ্যৎ তহবিল ভাতা, কাজে উপস্থিতি ভাতা, ভবিষ্যৎ তহবিলের উপর প্রশাসনিক ভাতার মাধ্যমে সর্বমোট গড়ে দৈনিক মজুরির প্রায় দ্বিগুণ নগদ টাকা দেওয়া হয় বলে মঙ্গলবার এক বিবৃতি দেয় বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন।

টি অ্যাসোসিয়েশন বলছে, শ্রমিকদের সামাজিক উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য দৈনিক ১৭৫ টাকার বিভিন্ন রকম সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৬৮টি বাণিজ্যিক চা উৎপাদনের বাগান কাজ করছে, যেখানে দেড় লাখেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে। উপরন্তু বাংলাদেশ বিশ্বের তিন শতাংশ চা উৎপাদন করে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশি চায়ের বাজারের মূল্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। আর জিডিপিতে এই শিল্পের অবদান প্রায় এক শতাংশ।

আন্দোলনের কারণে সিলেট ও চট্টগ্রামের ১৬৮ চা বাগানে থেকে দৈনিক ২০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যমানের চা পাতা নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি বাগান মালিকদের।

সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়, খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভর্তুকির মাধ্যমে দুই টাকা কেজি দরে মাস প্রতি শ্রমিককে ৪২ দশমিক ৪৬ কেজি চাল অথবা গম রেশন দেওয়া হয়। তাছাড়া শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তা আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে প্রায় ৯৪ হাজার ২০০ বিঘা জমি চাষাবাদের জন্য বন্টন করা হয়েছে। ১৯০ বছরের পুরোনো শিল্প হিসেবে বাংলাদেশের অন্যান্য যেকোনো শিল্পের তুলনায় অনেক আগে থেকেই শ্রমিক আইন অনুসরণ করা হচ্ছে প্রতিটি চা বাগানে। শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্য নিশ্চিতে ১৬ সপ্তাহের মজুরিসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পাচ্ছে নারী শ্রমিকরা। একজন শ্রমিকের বসত বাড়ির জন্য পরিবার প্রতি এক হাজার ৫৫১ স্কয়ার ফিট করে বাড়িসহ সর্বমোট পাঁচ হাজার ৮০০ বিঘা জায়গা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২ টি বড় গ্রুপের ও ৮৪ টি বাগানের হাসপাতালে ৭২১ শয্যার ব্যবস্থা, ১৫৫ টি ডিসপেনসার সহ সর্বমোট ৮৯১ জন মেডিকেল স্টাফ নিয়োজিত আছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, শ্রমিকদের সন্তানদের সুশিক্ষা নিশ্চিতকরনে প্রাথমিক, জুনিয়র ও উচ্চ বিদ্যালয় মিলিয়ে সর্বমোট ৭৬৮ টি বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে যেখানে ১ হাজার ২৩২ শিক্ষক দ্বারা বর্তমানে ৪৪,১৭১ জন শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকের ভাতা, বিভিন্ন রকম শ্রমিক কল্যাণ সূচি যেমন বিশুদ্ধ খাবার পানি, ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক, স্বাস্থসম্মত টয়লেট, পূজা, বিনোদন প্রভৃতি কর্মকাণ্ডে সামগ্রিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। তাছাড়াও, চা শ্রমিকের অবসরের পর তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা চাকরিতে নিয়োগ পেয়ে থাকে, যা একজন চা শ্রমিকের চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকে।

উল্লেখ্য, বিগত ২০১২ সাল থেকে ১০ বছরে চায়ের নিলাম মূল্যের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে শুন্য দশমিক ১৬ হারে বৃদ্ধি পেলেও চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয় ৯৪.২০ শতাংশ।

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/এমএইচ/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজনৈতিক দলের বিচারের বিষয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত: চিফ প্রসিকিউটর
হবিগঞ্জে দুই এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৫০
বাংলাদেশের নতুন পেস বোলিং কোচ শন টেইট
আবেগবশত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না, সরকারকে রিজভী 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা