জবি শিক্ষক রিতু বললেন ‘আমি স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট ২০২২, ১২:১২| আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২২, ১২:২২
অ- অ+

ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক রিতু কুন্ডু এবার আনুষ্ঠানিকভাবে নামও পরিবর্তন করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হলফনামা দিয়ে স্বেচ্ছায় ইসলামধর্ম গ্রহণ করেছি। আমাকে কেউ প্ররোচিত করেনি। কেউ জোর করেনি।’ ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতার পর এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন রিতু। তার নতুন নাম আয়েশা জাহান রিতু।

ইতোমধ্যে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট‌ও আয়েশা জাহান রিতু নামে খোলা হয়েছে। শিক্ষকতা ছাড়াও তিনি লেখালেখি করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর থেকে ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে লিখছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতু। ধর্ম পরিবর্তন করায় তাকে নিয়ে আলোচনা ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে বাইরে এসেছে।

গত মঙ্গলবার ঢাকার প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাশ চন্দ্র অধিকারীর কাছে দেওয়া হলফনামার মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ‘রিতু কুণ্ডু’ নাম পরিবর্তন করে আয়েশা জাহান রাখেন।

আয়েশা জাহান রিতু বলেন, আমার যে নতুন পরিচয় আয়শা জাহান নামের মাধ্যমে হয়েছে, সেজন্যও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। এখন থেকে আমি আয়শা জাহান। এই নামেই আমি পৃথিবীতে পরিচিত হব।

তার বাড়ি নীলফামারীর নালশমারী উপজেলায়। তার বাবার নাম দুলাল কান্তি কুণ্ডু ও মা মালা কুণ্ডু। বর্তমানে তিনি জবির লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

রিতু নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ২০১৩ সালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তা ছেড়ে ২০১৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগে যোগদান করেন।

যেভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ রিতুর:

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক ভিডিওবার্তায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষিকা বলেন, ‘দীর্ঘ ২৯ বছরে বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা ও জ্ঞান-বুদ্ধির আলোকে আমি ইসলামের বিষয়ে এক মাসব্যাপী পড়াশোনা শুরু করি। ১৬ দিনের মধ্যেই আমি সত্য উপলব্ধি করি এবং ২০১৭ সালের মার্চে ইসলাম গ্রহণ করি। এই দীর্ঘ ২৯ বছর পর্যন্ত আমি নিজের পরিবার, সমাজ ও মানুষের আচার-ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করি। এ দীর্ঘ সময় অন্যান্য প্রধান সব ধর্মের গ্রন্থাবলি পাঠ করেছি। জাপানেও এ বিষয়ে পড়াশোনা করি। ২০১২ সালে এসে বুঝতে পারি, এগুলো মানুষ রচিত বই (ঐশী বাণী নয়)।’

রিতু বলেন, ‘দীর্ঘ ২৯ বছর পর আমি পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ নিয়ে পড়ালেখা করি। এর পাশাপাশি আমি হাদিসও পাঠ করি। সামনে কোরআনের যে সূরা আর হাদিস পেয়েছি তাই মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। মহান আল্লাহর নির্দেশনার কারণ ও বিধি-নিষেধ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করি। কখনও এ বিষয়ে স্বপ্নও দেখেছি। তা হয়ত অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে।’

‘খুব ছোট থেকেই হয়ত আল্লাহ আমাকে ইসলাম কবুলের জন্য তৈরি করেছিলেন। ছোট থেকে আজ পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি ঘটনা, শিক্ষা, প্রতিবন্ধকতা আর সমাজের অসংগতি আমাকে ধীরে ধীরে ইসলামের পথে পরিচালিত করেছে। আমি যখন বুঝতে পারলাম, আমাকে নামাজ পড়তে হবে সেদিন থেকে টানা ১৪ মাস আমার নামাজ কাযা হয়নি। এরপর চাকরির কারণে দু-একবার কাযা হয়ে যায়। আমি যখন অনুভব করলাম, আমাকে পর্দা করতে হবে সেদিন থেকে আমি হিজাব পরা শুরু করি।’

পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন বলেও জানান এ শিক্ষিকা।

(ঢাকাটাইমস/২৫আগস্ট/এমএম/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে ট্রল, দিনাজপুরের এএসপি প্রত্যাহার
‘গোপালগঞ্জে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি’
“চাঁদাবাজ যতই প্রভাবশালী হোক, পার পাবে না”
গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা