হাসনাতের অনশন ভাঙিয়ে ঢাবি ভিসি বললেন ‘দাপ্তরিক কাজে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে যেতে হবে না’

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:১২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক জটিলতায় সৃষ্ট নানা রকম হয়রানি বন্ধের দাবিতে ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহর অনশন ভাঙালেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

বুধবার দুপুর ২টার দিকে প্রায় ২৭ ঘন্টা পর পানি খাইয়ে হাসনাতের অনশন ভাঙিয়ে ঢাবি উপাচার্য ৮ দফা দাবি পূরণের আশ্বাসও দেন। এসময় তিনি দাপ্তরিক কাজের জন্য আর কোনো শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে যেতে হবে না বলেও ঘোষনা দেন।

ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি ঘোষণা দিচ্ছি, এই মুহূর্ত থেকে কোনো শিক্ষার্থীকে দাপ্তরিক কাজের জন্য আর রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে যেতে হবে না। সকল কাজ হল এবং বিভাগে সম্পন্ন হবে। সেখানে আমাদের লোকাবল দেওয়া আছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

‘আমাদের কোনো শিক্ষার্থী যেন রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে এসে মুল্যবান সময় নষ্ট না করে। সেসময়টিতে তারা যেন পড়াশোনা করে, সেমিনার রুমে আড্ডা দেয় এবং লাইব্রেরিতে যায়। কোনোক্রমেই কোনো কাজেই তারা রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে আসবে না। সকল কাজ হল এবং লাইব্রেরিতে সম্পাদন হবে। সেখানে কেউ হয়রানি হলে প্রভোস্ট এবং চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এসময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে অনশন ভাঙানোর পর হাসনাত আব্দুল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের আমরণ অনশনের কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। দাবিগুলোর মধ্যে আছে—

১। শিক্ষার্থীদের হয়রানি নিরসনের জন্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন করতে হবে। যেখানে সেবাগ্রহীতারা সুনির্দিষ্ট প্রমাণাদির ভিত্তিতে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

২। প্রশাসনিক সব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটাইজড করতে হবে।

৩। নিরাপত্তা ও হারিয়ে যাওয়া কাগজপত্র তদন্তের স্বার্থে অফিসগুলোর অভ্যন্তরে প্রতিটি রুমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৪। প্রশাসনিক ভবনে অফিসগুলোর প্রবেশদ্বারে ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন করতে হবে। ডিসপ্লেতে অফিসগুলোর নাম, কক্ষ নম্বর ও সেখানে প্রদত্ত সেবার বিবরণী, কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম ও ছবিসহ প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদর্শন করতে হবে।

৫। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক ভবনের ক্যান্টিনেরও সংস্কার করতে হবে।

৬। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক বিদ্যা, পেশাদারিত্ব, মানুষিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মানসিক সেবা প্রদানকারী বিভাগ ও সেন্টারগুলোর শরণাপন্ন হতে হবে।

৭। অফিস চলাকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কাজেই লিপ্ত থাকতে পারবে না। সে নিরিখে প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থিত কর্মচারী ইউনিয়ন অফিস বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ক্লাবগুলোতে স্থানান্তর নিশ্চিত করতে হবে।

৮। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনকালীন প্রচারণা পরিবেশ বান্ধব করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ বজায় রাখতে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য হানিকর ও পরিবেশ বিপর্যয়কারী অপ্রয়োজনীয় পোস্টার লিফলেট ও ব্যানার ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/এসকে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :