সিলেটে ভোটযুদ্ধ: মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ৩৮৩ প্রার্থী

আগামী ২ নভেম্বর সিলেটের ওসমানীনগর ও জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ, বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন এবং গোয়াইনঘাট উপজেলার ৪ ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া বাকি সব কয়টি নির্বাচন ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে। এসব নির্বাচনে অংশ নিতে ৩৮৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল। এদিন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রার্থীরা।

সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যেরভিত্তিতে খবর

জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ: এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩ পদে প্রার্থী হয়েছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন করে ১০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আকমল হোসেন, বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আতাউর রহমান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী আমেরিকাপ্রবাসী সৈয়দ তালহা আলম ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আব্বাস চৌধুরী লিটন।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমাদান দিয়েছেন ৫ প্রার্থী। তারা হলেন- জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর (বীরেন্দ্র), জগন্নাথপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন লালন, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি ছালেহ আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাবেক কৃতি ফুটবলার সৈয়দ তুহেল মিয়া ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন লাকি।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সুফিয়া খানম সাথী, মহিলা লীগ নেত্রী রীনা বেগম ও সেলিনা বেগম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ: এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন।

চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমাদানকারীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি শামিম আহমদ ভিপি, স্বতন্ত্রের মোড়কে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং খেলাফত মজলিসের জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক মো. ছইদুর রহমান চৌধুরী।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনা মিয়া, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলদার আলী, উপজেলা বিএনপি নেতা ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান গয়াস মিয়া, বিএনপি নেতা জুয়েল মিয়া, দলিল লেখক আখতার হোসেন, ধারাভাষ্যকার আলী হোসেন রানা, মখলিছ মিয়া, আঞ্জুমানে আল ইসলাহ নেতা মাওলানা মো. আবদুল বাছিত ও খন্দকার মাসুম আহমদ।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি মহিমা সুলতানা সুমি, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি নেত্রী মুছলিমা আক্তার চৌধুরী, জানাহার বেগম ও ছানারা বেগম।

বিশ্বনাথ পৌরসভা: এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে মেয়র পদে ১১ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৫ জন ও কাউন্সিলর পদে ৭১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

তাদের মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ, খেজুর গাছ প্রতীকে উপজেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ শিব্বির আহমদ, আ.লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রবাসী আকদ্দুছ আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা পরিষদের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবাসী মুহিবুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন, যুক্তরাজ্যের ওল্ডহ্যাম বিএনপির সভাপতি প্রবাসী মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, নিউহাম বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবাসী মুমিন খান মুন্না, উপজেলা আঞ্জুমানে আল-ইসলাহর সভাপতি প্রবাসী তালুকদার ফয়জুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মতিউর রহমান সুমন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সফিক উদ্দিন, সংগঠক সমছু মিয়া।

বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও মেয়র পদে বিএনপির একাধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনোনয়নপত্র দাখিল করায় নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি টান-টান উত্তেজনা থাকবে বলেও মন্তব্য ভোটারদের।

গোয়াইনঘাট: এ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ৩ পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ২৫৭ জন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৫১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ১৭৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

পূর্ব জাফলং: এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৭ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৪ জন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান হামিদুল হক ভূঁইয়া বাবুল, আব্দুল মুতলিব, মো. শামীম আল মামুন, মোহাম্মদ আক্কাস আলী শেখ ও মুসুদুল আলম।

মধ্য জাফলং: এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারমধ্যে চেয়ারম্যান পদে জাতীয় পার্টি মনোনীত আব্দুর রহিম, আওয়ামী লীগ মনোনীত ফারুক আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী লোকমান হোসেন, মোহাম্মদ শাইদুর রহমান, লোকমান হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

পশ্চিম জাফলং: এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ২০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৫০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুছ সালাম, জমিয়ত মনোনীত মওলানা মুফতি আমির আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন পারভেজ, আব্দুল মুনিম মুন্সি ও আব্দুল মালিক।

সদর: এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত সুভাষ চন্দ্র পাল ছানা, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রহিম, মো. হোসাইন আহমদ, গোলাম রব্বানী সুমন, কামাল উদ্দিন, নাছির উদ্দীন, মো. মুহিবুর রহমান, জমিয়ত মনোনীত মো. আবুল খায়ের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী আগামী ১০ অক্টোবর মনোনয়ন যাচাই-বাছাই, ১৭ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ অক্টোবর আর ২ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৬অক্টোবর/এলএ)