হামলা-মামলা গ্রেপ্তার করে জনগণের আন্দোলনকে দমানো যাবে না: রিজভী
হামলা-মামলা-গ্রেপ্তার করে জনগণের আন্দোলনকে দমানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপিসহ গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো ত্যাগের বিনিময়ে হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার শপথ নিয়েছে তৃণমূল। কোনো বাধাই বিএনপির কর্মসূচি ঠেকাতে পারবে না।
সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এখন গণতন্ত্রের ছিটেফোটাও বাংলাদেশে নেই। মানুষের ভোটের অধিকার নেই, নেই কথা বলার অধিকার। বিচার বিভাগ এবং প্রশাসন চলছে এক ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। দেশে দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রতিযোগিতা এখন সীমাহীন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কুইক রেন্টাল, পর্দা ও বালিশের নামে দুর্নীতির নতুন নতুন মহাকাব্যের কথা না হয় বাদই রাখলাম, ফরিদপুরের জেলা পর্যায়ের ছাত্রলীগের এক নেতার ২০০০ কোটি টাকা পাচারের কথা কি শেখ হাসিনা জানতেন না? এটা তো ছোট্ট একটি ঘটনা, এর চেয়েও অনেক বড় দুর্নীতির মহাযজ্ঞ চলছে শেখ হাসিনার আমলে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার শেষ সময়ে এসে চরম মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে। একদিকে চলছে গায়েবী এবং মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক, অন্যদিকে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাদের গোয়েবলসীয় মিথ্যাচারকেও হার মানিয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বক্তব্যে তিনি লজ্জা না পেলেও গোটা জাতি লজ্জা পেয়েছে। তিনি বলেছেন ‘বিএনপি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসতে চায়, বিএনপি’র আমলের দুর্নীতি ও খুনের রাজনীতে দেশ ফিরে যাবে না’। তিনি আরও বলেছেন ‘গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে’। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই-২০১৪ এর বিনা ভোটের সরকার এবং ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের রাতে নিশিরাতের ভোট ইতিহাস সারাবিশ্বে নজীরবিহীন এক ঘটনা।
রিজভী বলেন, আজ ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন-বিএনপির সমাবেশ নিয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। আমি কাদের সাহেবকে পরিষ্কার বলতে চাই-আপনারা গণবিচ্ছিন্ন, তাই মানুষের উপস্থিতি দেখলেই ভয় পান। সেজন্য মিথ্যার বুলি কপচিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার শেষ চেষ্টা করছেন। আওয়ামী নেতাদের মিথ্যা কথা চেঁচানোর রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তুপের ওপর বসে অপপ্রচার করা ছাড়া আপনাদের গত্যন্তর নেই। বিএনপির সবগুলো সমাবেশে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি লাখ লাখ সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ দেখে আপনাদের অবৈধ মসনদ কেঁপে উঠেছে। এ মুহূর্তে দেশের মানুষের দাবি একটাই-এই সরকারের পদত্যাগ। জনসভা আয়োজনের নামে ভোট চাওয়া আওয়ামী লীগের যে কৌশল তা স্রেফ নাটক।
‘২০১৪ ও ২০১৮ সালে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হয়নি। জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পারে সেজন্যই তারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নানাবিধ সুবিধা দিয়েছিল এবং বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে কারাগারে পাঠিয়ে মাঠশুন্য করা হয়েছিল’—যোগ করেন রিজভী।
ঢাকাটাইমস/০৫ডিসেম্বর/ইএস