স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যায় স্বামীর ফাঁসির রায়

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৫৭

সাতক্ষীরা পৌরসভার মেহেদিবাগে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী রবিউল ইসলামকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আযম রোববার দুপুরে এক জনাকীর্ণ আদালতে এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি রবিউল ইসলাম আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এসময় আসামিকে তীব্র চিৎকারে কাঁদতে শোনা যায়।

ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রবিউল ইসলাম সাতক্ষীরা শহরের পূর্ব মেহেদীবাগের বেলাল গাজীর ছেলে।

মামলার বিবরনে জানান যায়, ২০১০ সালে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামের শহীদুল ইসলামের মেয়ে রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে সাতক্ষীরা শহরের পূর্ব মেহেদীবাগের রবিউল ইসলাম গাজীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জামাতাকে নগদ টাকা, সোনার গহনা ও আসাবাবপত্রসহ তিন লাখ টাকার জিনিসপত্র দেওয়া হয়। এরপরও বিয়ের এক বছর না যেতেই রবিউল ও তার পরিবারের সদস্যরা রাবেয়াকে বাপের বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে আসতে বলে। বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় রাবেয়ার ওপর শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে শহীদুল ইসলাম ৭০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপরও বাকি ৩০ হাজার টাকার দাবিতে রাবেয়াকে ২০১৪ সালের ৬ জুন সন্ধ্যা ৬টায় রবিউল ও তার পরিবারের সদস্যরা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যেয়ে মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান পিতা বেলাল গাজী। একপর্যায়ে পরদিন নিহতের বাবা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে জামাতা রবিউল ইসলাম, তার বাবা বিল্লাল গাজী, মা রোকেয়া বেগম, ভাই হাসান ও বোন আসমা খাতুনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধিত ২০০৩ সালের ১১(ক)/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামি রবিউল ইসলাম ২০১৪ সালের ৮ জুন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শিমুল কুমার বিশ্বাসের কাছে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক তানভির হোসেন ওই বছরের ১৭ নভেম্বর আদালতে এজাহারভুক্ত ৫ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নথি ও ১৩জন সাক্ষীর জবারনবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামি রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে স্ত্রী রাবেয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়্য়া বিচারক এমজি আযম তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। একই আদেশে চার আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদার করা হয়।

মামলার রায় শুনে আসামি রবিউল ইসলাম কাঠগোড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরাও।

রবিউলের ভাই হাসানুজ্জামান বলেন, ভাইকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। তারা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. এসএম হায়দার আলী।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু।

(ঢাকাটাইমস/৫ফেব্রুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :