বইমেলায় পাঠক খরা

রেজাউল মাসুদ
| আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:১০ | প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৮

১৯৯৬-৯৭ সালের কথা। বইমেলায় গেলাম। হুমায়ুন আজাদ স্যারের একটা বই কেনার পর যখন স্যারের একটা অটোগ্রাফ নিতে চাইলাম তখন স্যারকে খুঁজতে খুঁজতেই অবস্থা খারাপ হয়ে গেল। অনেক সময় এমনও হতো যে শত খোঁজার পরে শোনতাম, আজাদ স্যার কিংবা হুমায়ূন আহম্মেদ স্যার মেলাতেই নেই। আর এখনকার বইমেলায় ঠিক উল্টোটা ঘটছে। একটা বই কেনার পরেই দেখলাম লেখক আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন নিজে থেকেই নিজের অটোগ্রাফ দেওয়ার জন্য! আবার এমনও আমার দেখা দেখলাম লেখক নিজে তার পাবলিকেশনে এসে বারবার দেখে যাচ্ছেন যে, তার কয়টা বই বেচা হয়েছে!!

ইদানীং পাঠকের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে। পড়ার কালচার যেন নেই-ই। চারদিকে শুধু লেখক আর লেখক। লেখকের মান কমে গেছে নাকি লেখকরা পাঠকদের রুচি অনুযায়ী লিখছেন না? নাকি লেখকের একটি বড় অংশ কেবলমাত্র লেখক পরিচয়ের জন্য বই লিখছেন? বর্তমান সময়ে অনেক বড় প্রশ্ন এটি। এ থেকে উত্তোরণ কিভাবে!

ওমর খৈয়ামের বিখ্যাত উক্তি। তিনি বলেছিলেন, 'রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে/প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে/কিন্তু বই একটি অনন্ত যৌবনা/ যদি তা তেমন বই হয়।' সত্যিই তাই। আজকে যে হারে বই বের হচ্ছে তার মধ্যে ঠিক কতটি বই অনন্ত যৌবনা, কতগুলো কপি পেস্ট মার্কা, কি পরিমাণ বই নির্ভুল, মানসম্মত আর মননশীল এসব বলা কিংবা দেখার যেন কেউ নেই।

মেলার কলেবর বাড়ানো হয়েছে, স্টল সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক, কিন্তু বিক্রেতার সাথে ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি মোটেও। পর্যাপ্ত বই থাকলেও পাঠক নেই।

একমাত্র পাঠকই নির্ধারণ করে বইয়ের মান।

ভালো বইয়ে যেমন সমৃদ্ধ হবে বাংলা সাহিত্য, তেমনই লেখক হিসেবে আসবে তৃপ্তি। তখন বই প্রেমিক, বই পড়ুয়ারা খুঁজে পাবে তাদের প্রাণের প্রিয় বইমেলাকে।

লেখক: পুলিশ কর্মকর্তা

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :