রাজাকারের নাম তালিকাবদ্ধ হতে আর কত দেরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৩ | প্রকাশিত : ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫৮

আড়াই বছর আগে রাজাকারের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তবে এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। কবে এ তালিকা প্রকাশ করা হবে, তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না তালিকা প্রনয়ণে কাজ করা এই সংসদীয় কমিটি।

তবে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান ঢাকা টাইমসকে গতকাল রাতে বলেছেন, তালিকা তৈরির কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা ধাপে ধাপে এ তালিকা প্রকাশ করব।

তবে কবে নাগাদ তালিকা প্রকাশ হতে পারে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

অন্যদিকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে (জামুকা) রাজাকারের তালিকা তৈরির ক্ষমতা দিয়ে গত বছরের আগস্ট মাসে সরকার জাতীয় সংসদে আইন পাস করে। ছয় মাস আগে আইনগত কর্তৃত্ব পায় জামুকা। কিন্তু এখনও জামুকা রাজাকারের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাধীনতার এত বছর পর রাজাকারের তালিকা তৈরির কাজটি কঠিন। এতে সময় লাগবে।

রাজাকারের তালিকা করার আইনগত কর্তৃত্ব থাকা জামুকার চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে গতকাল রাতে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এটি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বলতে পারবে।’

তবে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, ‘এ বছর রাজাকারের তালিকা হচ্ছে না। আগামী বছরের (চলতি বছর) মার্চ মাসের মধ্যে এই তালিকা প্রকাশ করা হবে।

আইন অনুযায়ী, পদাধিকারবলে জামুকার চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীসহ স্বাধীনতাবিরোধী ১০ হাজার ৭৮৯ জনের তালিকা (প্রথম পর্ব) ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সরকার প্রকাশ করলেও তাতে নানা ভুল ও অসঙ্গতি থাকায় শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। সেই তালিকায় কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ব্যক্তির নামও ছিল। আবার কুখ্যাত অনেক রাজাকারের নাম তালিকায় ছিল না। এ নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, জাতীয় সংসদেও প্রশ্ন ওঠে। পরে তালিকাটি স্থগিত করার পাশাপাশি নিজেদের ওয়েবসাইট থেকেও সরিয়ে ফেলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

রাজাকারের তালিকা নিয়ে বিতর্ক এবং তা প্রত্যাহার হওয়ায় নিজেরাই কাজটি করার উদ্যোগ নেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ জন্য ২০২০ সালের ৯ আগস্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটি একটি সংসদীয় উপকমিটি গঠন করে। শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটিতে ছিলেন- রফিকুল ইসলাম, রাজিউদ্দিন আহমেদ, এবি তাজুল ইসলাম, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ। কিন্তু এই কমিটি নিয়মিত বৈঠক করতে পারছিল না। আবার বৈঠক ডাকলেও কোরাম পূর্ণ হতো না। পরে ২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আগের উপকমিটি বাতিল করে শাজাহান খানকে আহ্বায়ক রেখে নতুন কমিটি করে। নতুন উপকমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ও আওয়ামী লীগের এবি তাজুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন-ভাতা নেওয়া রাজাকারদের তালিকা জেলা প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংগ্রহের সুপারিশ করা হয়েছিল। পরে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে তালিকা চাওয়া হয়। সে সময় শুধু ১১টি জেলা থেকে প্রতিবেদন এসেছিল। এর মধ্যে চাঁদপুরে ৯ জন, মেহেরপুরে ১৬৯ জন, শরীয়তপুরে ৪৪ জন, বাগেরহাটে ১ জন ও নড়াইল থেকে ৫০ জন রাজাকারের তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। বাকি ছয়টি জেলার জেলা প্রশাসকেরা জানিয়েছিলেন, তাদের জেলার রেকর্ডরুমে রাজাকারদের নামের কোনো তালিকা তারা পাননি।

(ঢাকাটাইমস/২৬ মার্চ/আরআর/আরকেএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :