বর্ষবরণ উৎসবে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা, নিরাপত্তায় ২৭০০ পুলিশ

পহেলা নববর্ষ ১৪৩০। বাঙালির বর্ষবরণ উৎসব আগামীকাল। বাংলা নববর্ষ বরণে দেশজুড়ে চলছে প্রস্তুতি। প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে বর্ষবরণ উৎসব।
এদিকে বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে রাজধানী জুড়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ২৭০০ পুলিশ। এছাড়াও বর্ষবরণে উৎসবে যারা যোগ দেবেন তাদের মানতে হবে বেশ কিছু নির্দেশনা।
বৃহস্পতিবার রমনা বটমূলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
এর আগে তিনি ডিএমপির নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
বর্ষবরণে উৎসবে মানতে হবে বেশ কিছু নির্দেশনা:
বর্ষবরণের দিন (১লা বৈশাখ) ব্যাগ নিয়ে কেউ রমনা বটমূলে প্রবেশ করতে পারবেন না। এদিন বিকাল চারটায় রমনায় সব অনুষ্ঠান শেষ করে স্থান ত্যাগ করতে হবে। এছাড়া ভুভুজেলাসহ বিভিন্ন উচ্চশব্দ ব্যবহার করে নগরবাসীর দুর্ভোগ সৃষ্টি করা যাবে না।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিবছর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রমনা বটমূলে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে থাকে। আমাদের সিটিটিসির (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) বোম ডিসপোজাল ইউনিট আন্তর্জাতিক মানের। যদি কোথাও বোম পাওয়া যায় তাহলে সিটিটিসির রোবোটিকস সিস্টেম ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে বোমা আইডেন্টিফাই (শনাক্ত) করা যাবে।
পরবর্তীতে রোবোটের মাধ্যমে বোমগুলো নিস্ক্রিয় করা যাবে। এর মধ্যে যদি কোনো দুষ্কৃতিকারী ঢুকে যায় তাহলে সোয়াত টিম সেই মহড়া দিয়েছে এবং তাদের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে।
রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, রবীন্দ্র সরোবর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক প্রায় ২৭০০ পুলিশ কাজ করছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এবারের পহেলা বৈশাখ ঢাকাবাসীসহ সমস্ত বাঙালি উৎসবমুখরভাবে পালন করতে পারে সেজন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে।’
তিন স্তরের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রমনা কেন্দ্রিক মোট নয়টি গেট থাকবে। এরমধ্যে চারটি গেট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে বাকি তিনটি গেট দিয়ে প্রবেশ-বাহির হওয়া যাবে। প্রত্যকটি গেটে পুলিশ, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেকটর থাকবে। প্রত্যেককে সার্চ করে রমনায় প্রবেশ করানো হবে।’
খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে অনেক সময় দেখা যায় উঠতি বয়সী ছেলেরা ভুভুজেলাসহ বিভিন্ন উচ্চ শব্দ করে নগরবাসীর দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এ ধরনের শব্দ না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। ব্যাগ নিয়ে কেউ রমনা পার্কে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রত্যকের চেক-ইন করা হবে, তাই বাড়তি কোনো কিছু নিয়ে রমনায় আসবেন না।’
রমনায় লোক সমাগম বেশি হলে বেরিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রমনা পার্ক সকাল ছয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। চারটার পর থেকে সব অনুষ্ঠান শেষ করে রমনা ত্যাগ করতে হবে। চারটার পর আর কাউকে রমনায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আদালত পাড়া থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত দশ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছি। পলাতক জঙ্গিরা নজরদারিতে রয়েছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সরাসরি কোনো জঙ্গি থ্রেট বা হুমকি নেই৷’
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘আমি বাঙালি হিসেবে মনে করি- দুই একটা বোমা দিয়ে দমন করা যাবে না। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী তাদের দোসররা কামান-বন্দুক নিয়ে এই বাঙালিদের দমন করতে পারে নাই। আর কোথাকার কোন জঙ্গি একটা দুইটা বোমা মেরে আমাদেরকে দমন করবে আমরা ওইরকম ভীতুর জাতি নই৷ আমরা বীরের জাতি। কোনো জঙ্গি, কোনো শকুন আমাদের প্রতি নখ দেখাবে আমার সেই জাতি নই।’
‘এরপরেও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। কেউ কোনো ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারবে না।’
(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/এসএস/এসএম)

মন্তব্য করুন