কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:১২| আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৫
অ- অ+

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ সোমবার সকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সংলাপে যোগ দিয়েছেন।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কক্সবাজারে তিন দিনের ‘স্টেকহোল্ডার সম্মেলন’ আয়োজন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।

এ সম্মেলন থেকে আসা প্রস্তাব এবং বক্তব্যগুলো আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে তুলে ধরার কথা বলছে সরকার।

সেইসঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের সেই অনিশ্চিত যাত্রার আট বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ সোমবার।

“স্টেকহোল্ডারস ডায়লগ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বিষয়ে উচ্চস্তরের কনফারেন্সের জন্য প্রাপ্ত শিক্ষা” শীর্ষক তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি রবিবার থেকে শুরু হয়েছে। এটি জেলা শহরের হোটেল বে ওয়াচ-এ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন।

এই ডায়লগে অংশ নিচ্ছেন কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা, বৈশ্বিক সংস্থা ও দেশের-বিদেশের একাডেমিকরা।

বাহ্যিক সচিব আসাদ আলম সিয়াম বিএসএস-কে জানান, এই ডায়লগ সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া উচ্চস্তরের বৈঠকের প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “এর বিশেষ তাৎপর্য হলো রোহিঙ্গাদের সরাসরি অংশগ্রহণ, যেখানে তারা তাদের আশা, হতাশা এবং ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন। এই মতামত ও আলোচনাগুলোকে ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত উচ্চস্তরের রোহিঙ্গা কনফারেন্সে প্রতিফলিত করা হবে।”

চলমান কক্সবাজার ডায়লগে প্রধান কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, যেমন—মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা, রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক অঙ্গনে দৃশ্যমান রাখা এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য পথ নির্ধারণ।

তিন দিনের এই অনুষ্ঠান আগামীকাল শেষ হবে। শেষদিনে অংশগ্রহণকারীরা রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশন সকাল ১১টা থেকে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

তিন দিনব্যাপী এই সংলাপ আগামীকাল মঙ্গলবার শেষ হবে।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে। মাত্র কয়েক মাসে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেন। পূর্বে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

জাতিসংঘ ওই হত্যাযজ্ঞকে ‘জাতিগত নিধনের উদাহরণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারও এটি ‘জেনোসাইড’ হিসেবে ঘোষণা করে।

বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর রোহিঙ্গারা কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঁশ ও প্লাস্টিকের খুপরিতে বসবাস শুরু করে। কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন কার্যক্রম প্রতিশ্রুতি মতো এগোয়নি। ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও মিয়ানমার সরকারের ওপর ভরসা করতে না পারায় তা ব্যর্থ হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৫ আগস্ট/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
অস্ত্র-গুলির তথ্য দিলেই মিলবে নগদ টাকা! জানুন কোনটিতে কত বাজেট
সালমান খানের পারিশ্রমিক একলাফে কমলো ১০০ কোটি রুপি
বদলে গেল হাজী সেলিম ডিগ্রি কলেজের নাম
বিয়ের ১২ বছর পর একসঙ্গে চার কন্যা সন্তানের জন্ম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা