দেশে ভয়হীন স্বাধীন সাংবাদিকতা কমেছে: টিআইবি

দেশে ভয়হীন স্বাধীন সাংবাদিকতা কমেছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।
বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব হলো- রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যম যাতে বিনা বাধায় তার ওপর অর্পিত ভূমিকা পালন করতে পারে, তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা।’
‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময়ে দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যাগত তথ্য উপস্থাপন করে অন্তঃসারশূন্য আত্মতৃপ্তি লাভের চেষ্টা করতে দেখা যায়’ উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানি, হামলা ও মামলার মাধ্যমে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধসহ স্বাধীন মত ও চিন্তা প্রকাশের চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা চলমান।’
এসময় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক ২০২২-এ বাংলাদেশের এক বছরে ১০ ধাপ পিছিয়ে ১৬২-তে নেমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের কথা উল্লেখ করে ইফতেখার বলেন, ‘নির্ভরযোগ্য গবেষণা বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বলবৎ হওয়ার পর থেকে এ আইনে যত মামলা হয়েছে, তার প্রতি চারটির একটি হয়েছে সাংবাকিদকদের বিরুদ্ধে। এসব মামলার বাদীদের বড় অংশই সরকার ও ক্ষমতাসীন দলসংশ্লিষ্ট। তাই এটি বলা কোনোমতেই অত্যুক্তি হবে না, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহার মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং গণতান্ত্রিক দায়বদ্ধতার প্রতি প্রহসনের নামান্তর।’
এছাড়া সাংবাদিকদের তুলে নিয়ে যাওয়ার দীর্ঘ সময় পর এ আইনে মামলা করা, অজামিনযোগ্য ধারায় আটক রেখে অভিযোগ প্রমাণের আগেই দীর্ঘসময় কারাগারে আটকে রাখা সংবিধানস্বীকৃত মৌলিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তিনি।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘একদিকে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাসমূহের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়া, অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খড়গসহ অদৃশ্য শক্তির প্রভাব বলয়ে সংবাদকর্মীদের সার্বিক কর্মক্ষেত্রে এক ধরনের ভীতিজাগানিয়া পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
গণমাধ্যম এখন সেলফ সেন্সরশিপের ফাঁদে আটকা পড়েছে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিনিয়ত হামলা, মামলা, ক্ষেত্রবিশেষে জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে নাগরিকদের বস্তুনিষ্ঠ তথ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিতে ও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অধিকাংশ সংবাদকর্মী সাহসী ভূমিকা পালন করছেন।’
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সেই সংবাদকর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানায় টিআইবি।
বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক দায়বদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অবাধ তথ্য ও মতপ্রকাশের অধিকার, মুক্তচিন্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তাসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
(ঢাকাটাইমস/০৩মে/এফএ)

মন্তব্য করুন