কক্সবাজারে অপহরণ-ডাকাতিতে আরসার নেতা ছালেহ উদ্দিন

সিরাজুম সালেকীন, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ মে ২০২৩, ২২:০৫

কক্সবাজারে একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনায় জড়িত আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) অন্যতম নেতা হাফিজুর রহমান ওরফে ছালেহ উদ্দিন। ছলে ডাকাত বা ছালেহ ডাকাত নামে পরিচিত বয়স ২৫ পেরোনো এই যুবক আরসাপ্রধান আতাউল্লাহর পরেই দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান চালিয়েও তাকে ধরতে পারেনি। একটি গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকা টাইমসকে এসব তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে অভিনব সব কৌশলে কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দাদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে। টেকনাফের বাহারছাড়া, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নে অপহরণ এখন নিত্যদিনের ঘটনা। অপহরণের পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। ফেরত আসা ব্যক্তিরা প্রাণনাশের ভয়ে অপহরণকারীদের সম্পর্কে কিছু বলছেন না। একের পর এক ঘটনা ঘটলেও কারা অপহরণে জড়িত তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। ফলে ধরাছোঁয়ার বাইরে অপহরণকারীরা।

জানা গেছে, কক্সবাজারে বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অপহরণ বাণিজ্য করে থাকে। তবে এর মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছালেহ ডাকাতের গ্রুপ। অপহরণের পর টেকনাফের পাহাড়-জঙ্গলের আস্তানায় নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে তারা। নানান কৌশল অবলম্বন করায় ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিবন্ধন না থাকায় তাদের শনাক্ত ও ধরতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, হাফিজুর রহমান ওরফে ছালেহ উদ্দিন বা ছলে উদ্দিন বর্তমানে আরসার গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাবার নাম মো. শফি। মাতা লতি বানু বেগম। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও ছালেহ বা তার পরিবার রোহিঙ্গা তালিকাভুক্ত না। দেশে থাকা রোহিঙ্গাদের তালিকায় কাগজে কলমে নাম না থাকায় অপহরণ-ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ নির্বিঘ্নে করে আসছেন ছালেহ উদ্দিন। তার ১৫-১৮ জনের একটি গ্রুপ আছে। যারা নানান অপরাধে জড়িত। বিশেষ করে সম্প্রতি কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণের প্রধান সমন্বয়ক এই ছালেহ উদ্দিন। আরসা নেতা আতাউল্লাহ’র নির্দেশে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহাড়ে অবস্থা করে দলটি। সেখানেই অপহরণকারী অপহরণে করে জিম্মি করে রাখা হয়। পরবর্তীতে অর্থের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়। নানান অপরাধ করে এই ছালেহ ও তার দলবল মিয়ানমারে আশ্রয় নেন।

সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যাণ্ডে মানবপাচারে জড়িত এই চক্রটি। বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকলেও ছালের নাম রোহিঙ্গা তালিকায় না থাকায় অপরাধ করলেও তাকে আইনের আনা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা নামপ্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা টাইমসকে বলেন, হাফিজুর রহমান ওরফে ছলে উদ্দিন আরসা সন্ত্রাসী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। সে (ছলে) আরসা নেতা আতাউল্লার নির্দেশে অপহরণ, ডাকাতি, ও মাদক চোরাচালানে জড়িত। তার ভয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লোকজন ভীত। বিভিন্ন সময় এই ছলে উদ্দিন ক্যাম্পে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে জনমনে আতংক সৃষ্টি করেছেন। তাকে ধরতে অভিযান চালানো হলেও তাতে সফল হওয়া যায়নি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় চেষ্টা ছালেহ ডাকাতসহ বিভিন্ন গ্রুপকে ধরতে কাজ করছি। ডাকাতি, অপহরণসহ বিভিন্ন ঘটনায় আমরা অপরাধী শনাক্তে কাজ করছি। সম্প্রতি অপহৃত দুইজনকে ৩৫ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে উদ্ধার এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/০৪মে/এসএস/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :