ফারুকের বিদায় দিনে কাঠগড়ায় অভিনেতা সিদ্দিকের রুচিবোধ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৬ মে ২০২৩, ২২:১২ | প্রকাশিত : ১৬ মে ২০২৩, ২২:০৩

তিন দফা জানাজা শেষে গাজীপুরের কালীগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা তারকা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান দুলু ওরফে ফারুককে। তার এই বিদায়ের দিনে কঠোরভাবে সমালোচিত হলেন ছোটপর্দার রম্য অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান। কাঠগড়ায় উঠল তার রুচিবোধ।

মঙ্গলবার সকালে ফারুকের মরদেহ দেশে আনা হয়। বেলা ১১টা ৪০ নাগাদ শ্রদ্ধা জানাতে নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিনোদন জগতের অনেক তারকা। ছিলেন অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানও। ফারুকের অসুস্থতার পর থেকেই সিদ্দিক বলে আসছেন, ‘মিয়া ভাই’র আসন ঢাকা-১৭ থেকে তিনি এবার নির্বাচন করতে চান।

সেই ধারাবাহিকতায় ফারুকের বিদায় বেলা তার মরদেহের পাশে দাঁড়িয়েও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন সিদ্দিক। জানান, তিনি ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান। তার দাবি, ফারুক এই আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন যা করতে পারেননি, তিনি সেই অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে চান।

ব্যস, এরপরই ওঠে সমালোচনার ঝড়। সামাজিক মাধ্যমে অনেককেই অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানের নিন্দায় ফেটে পড়তে দেখা গেছে। তাদের বক্তব্য, বাংলা চলচ্চিত্রের এমন বড় একজন তারকা মারা গেছেন কয়েক ঘণ্টাও হয়নি। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। সেই মানুষটার চির বিদায়ের দিনেই সিদ্দিক তার সংসদ সদস্য হওয়ার খায়েশের কথা জানিয়ে বিকৃত মানসিকতা এবং নিম্ন রুচিবোধের পরিচয় দিয়েছেন।

কেউ আবার মন্তব্য করেছেন, বিষয়টা দুঃখজনক। অভিনেতা সিদ্দিকের মায়া মমতা বলতে কিছুই নেই। যদি থাকতো, তাহলে একজন সহকর্মীর শেষ বিদায়ের দিনে তার আসন থেকে নির্বাচন করার কথা তিনি বলতে পারতেন না। তার সংসদ সদস্য হওয়ার ইচ্ছা জাগতেই পারে। কিন্তু সেই ইচ্ছাটার কথা কি তিনি নায়ক ফারুকের শ্রদ্ধা নিবেদনের জায়গায় গিয়ে বলতে পারেন?

মো. জিয়াউল হাসান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘যিনি ফারুকের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে (সিদ্দিকুর রহমান) নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন, আমার দৃষ্টিতে তিনি অমানবিক কাজ করছেন। দুই-চার দিন পরেও প্রচার-প্রচারণা চালানো যেত।’

এভাবে অনেকেই ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে নিন্দায় ফেটে পড়েছেন, যেখানে যেখানে সিদ্দিকুর রহমানের ওই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্রের অনেক সিনিয়র শিল্পীও। তাদের বক্তব্য, সিদ্দিকুর রহমানের বুদ্ধিসুদ্ধি লোপ পেয়েছে। তাই যদি না হতো, তাহলে তিনি ফারুকের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে তার আসন থেকে এমপি হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করতেন না।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান অভিনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক। সংসদ সদস্যও হন। কিন্তু খুব বেশিদিন দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। নানা অসুস্থতা এসে ঘিরে ধরে তাকে। সবশেষ জিবিএস নামে বিরল এক নিউরোলজিক্যাল রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। দুই বছরেরও বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

ফারুকের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে ঢাকা-১৭ আসন আপাতত শূন্য হয়ে গেল। এই আসন থেকে নির্বাচন করার কথা বহু আগে থেকেই বলে আসছেন অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান। এর আগে তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু পাননি। এবার সিদ্দিকের চোখ ঢাকা-১৭ আসনের দিকে।

সিদ্দিকের দাবি, তিনি গত ২৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী লীগপন্থী পরিবারে তার জন্ম। তার বাবা স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন ২২ বছর। এলাকা কন্ট্রোল করতেন তারা। ১৯৯৪ সাল থেকে ছাত্রলীগ করেন সিদ্দিক। বঙ্গবন্ধু সংস্কৃতি জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তিনি।

সিদ্দিকের বিশ্বাস, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-১৭ আসনের নৌকার মাঝি হিসেবে তাকেই মনোনীত করবেন। অভিনেতা বলেন, ‘সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমি এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছি।’ তার দাবি, আমি জনগণের সেবা করতে চাই।’

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :