দেশে ট্রানশানের কারখানা চালু, তৈরি হবে ইনফিনিক্স-টেকনোসহ ৩ ব্যান্ডের ফোন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
  প্রকাশিত : ২৪ মে ২০২৩, ২২:১৪
অ- অ+

বাংলাদেশের বাজারে স্মার্টফোন তৈরির কারখানা চালু করল চীনের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ট্রানশান হোল্ডিংস। ‘আই স্মার্ট ইউ’ নামে এই কারখানাটি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে। এতে টেকনো, ইনফিনিক্স ও আইটেল এ তিন ব্র্যান্ডের ফিচার ও স্মার্টফোন উৎপাদিত হবে। সবমিলিয়ে প্রতি মাসে কারখানাটিতে ১০ লাখ হ্যান্ডসেট উৎপাদিত হবে।

বুধবার এই কারখানার উদ্বোধন করেন ট্রানশান হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান এবং জেনারেল ম্যানেজার জর্জ জু এবং ‘আই স্মার্ট ইউ’ বাংলাদেশের সিইও রেজওয়ানুল হক।

উদ্বোধনী বক্তব্য দেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল এবং গুগল পার্টনারশিপ ডিরেক্টর মাহির শাহীন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

এছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশে চীনের দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সং ইয়াং।

অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার স্বল্পমূল্যে স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসার জন্য এবং ডিজিটাল শূন্যতা পূরণের জন্য ট্রানশানকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের ঘোষণার পর দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিপুল বৃদ্ধি ঘটে। বর্তমানে যে সংখ্যা ১৩০ মিলিয়ন। তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের লক্ষ্য এবং ডিজিটাল চ্যালেঞ্জের কথা বলেন।

মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, দেশে এখন চাহিদার ৯৫ শতাংশ মোবাইল উৎপাদন হচ্ছে। ছোটখাটো সমস্যা মোবাইল উৎপাদকদের আছে, তাদের সমস্যাগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। আমরা যেন হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য হাব হিসেবে গড়ে উঠতে পারি এবং রপ্তানিও বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আই স্মার্ট ইউ ফ্যাক্টরির প্রথম ধাপের বিনিয়োগ ২২ মিলিয়ন ডলার। নকশা থেকে নির্মাণ সব ক্ষেত্রেই এ ফ্যাক্টরি সর্বাধুনিক প্রোডাকশন স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখছে, এর অত্যাধুনিক লে-আউট আধুনিক মোবাইলফোন তৈরিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ২০ হাজার বর্গমিটারের এ বিশাল ফ্যাক্টরিতে গুণগত মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য থাকছে উন্নত প্রযুক্তি। উৎপাদন প্রক্রিয়াকে নিরবচ্ছিন্ন রাখতে টেকসই মান ও দক্ষতার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। এ প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশের স্মার্টফোনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে ট্রানশান সফল হবে।

কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশাল এ কারখানায় ১২টি হ্যান্ডসেট প্রোডাকশন লাইন রয়েছে। এছাড়া আরও দুই লাইনে মোবাইল ফোনের খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদন হচ্ছে। ফিচার ও স্মার্টফোন মিলিয়ে কারখানাটির দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা সাড়ে ৩৩ হাজার হ্যান্ডসেট।

ট্রানশান বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজোয়ানুল হক বলেন, ‘আমরা দুই একর জমির ওপর কারখানাটি স্থাপন করেছি। আর প্রতি মাসে আমাদের কারখানার হ্যান্ডসেট উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় এক মিলিয়ন।

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এক লাখ ৫৫ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার। তারপরও বেশিরভাগ মানুষ মোবাইলফোন ব্যবহার করে। কাজেই মানসম্মত মোবাইলফোন জরুরি। আমাদের জনসংখ্যার চেয়েও মোবাইল গ্রাহক বেশি। সঠিক সময়ে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এ কারখানা উদ্বোধন করছেন এজন্য ধন্যবাদ।

তিনি জানান, সরকার ১৬টি কোম্পানিকে স্মার্টফোন তৈরির অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি চালু হয়েছে। কিন্তু গ্রাহক যে সেবা পাওয়ার কথা তার ব্যত্যয় ঘটছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আশা করবো, নতুন কোম্পানি দেশের সেরা হবে। বাংলাদেশের ফোনগুলো বিদেশি মার্কেট ধরতে পারবে। আমরা বিটিআরসির সহযোগিতা বাড়িয়ে দেব, যেন রপ্তানি করে বেশি আয় করতে পারে।

ট্রানশান হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান এবং জেনারেল ম্যানেজার জর্জ জু বাংলাদেশকে তাদের ব্যবসার প্রসারে একটি কৌশলগত বাজার হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, প্রায় ১৭২ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যার এ দেশে গ্রাহক পর্যায়ে সাশ্রয়ী এবং উচ্চমানের ফিচারসহ মোবাইলফোনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এর ফলে বাংলাদেশের নতুন সম্ভবনাময় বাজার তৈরি হচ্ছে।

জু আশা প্রকাশ করেন ‘আই স্মার্ট ইউ’র মাধ্যমে বাংলাদেশে যে বিনিয়োগ আসবে সেটা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশের ডিজিটাইজ ও আধুনিকায়নেও ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশে এ ফ্যাক্টরি স্থাপন ট্রানশানের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। দেশে ট্রানশানের আগের কারখানা ছিলো কার্লকেয়ার টেকনোলজি বিডি লিমিটেড। যা বন্ধ করে নতুন এই কারখানা করে তারা। এ ফ্যাক্টরিতে দুই হাজার স্থানীয় লোক কাজের সুযোগ পাবেন। ট্রানশান শিক্ষা এবং ট্রেনিং এ বিনিয়োগের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এর ফলে স্থানীয় মেধার বিকাশ এবং স্কিল ডেভেলপমেন্টের সুযোগ আছে।

(ঢাকাটা ইমস/২৪মে/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে ট্রল, দিনাজপুরের এএসপি প্রত্যাহার
‘গোপালগঞ্জে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি’
“চাঁদাবাজ যতই প্রভাবশালী হোক, পার পাবে না”
গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা