ফেনী নদীতে মাছ ধরা বন্ধ, সরকারি সহায়তা পাননি জেলেরা

নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরতে না পেরে আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলেরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। পেটের দায়ে অনেকে মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ রক্ষায় গত ২০ মে থেকে ৬৫ দিন নদী, সমুদ্র ও সাগরের মোহনায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার ১১ দিন পরও ফেনীর সোনাগাজীতে নিবন্ধিত প্রায় দুই হাজার জেলে পরিবারের কাছে সরকারি সহায়তা পৌঁছায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন নিরাপদ করার জন্য মৎস্য বিভাগ মাছ ধরার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা করে। এসময়ে নদী ও সমুদ্রের মাছ ধরা, বেচাকেনা, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় করা যাবে না। এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থেকে কাজ করছেন। প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ ৬৫ দিন নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য জেলেদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার চর খোন্দকার, দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়া ও পূর্ব চর চান্দিয়া এলাকার জেলেপাড়ায় সহায়তা না পেয়ে জেলারা অনেক কষ্টে দিন পার করছেন। অনেকে আবার পেটের দায়ে রাতের আধারে নদী ও সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করে সূর্য ওঠার আগেই তীরে ফিরে এসে মাছগুলো আড়তদার ও ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করে জীবিকানির্বাহ করছেন।
নিবন্ধিত জেলেরা জানান, সোনাগাজীতে প্রায় তিন হাজার জেলে রয়েছে। সরকারিভাবে মাত্র দুই হাজার জেলেকে নিবন্ধিত করা হয়েছে। মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়ে নিবন্ধিত জেলেরাও সরকারি সহায়তা না পেয়ে মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন।
চর খোন্দকার জেলেপাড়ার প্রিয়লাল জলদাস বলেন, নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ। অনেক কষ্টে তাদের জীবিকা চলছে। কেউ কেউ বিভিন্ন সড়কের পাশে জলাশয় ও পুকুর থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে পরিবারের খাবার জোগাড়ের ব্যবস্থা করছেন। অনেক জেলে বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন। নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরতে না পারায় ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারছে না।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, সোনাগাজী সদর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নে ১ হাজার ৯৯৭ জন নিবন্ধিত জেলে পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন। মাছের প্রজনন মৌসুমে উপজেলার নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে মাত্র ৩৪৫ জেলে পরিবারকে সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার ১১ দিনেও কোনো বরাদ্দ আসেনি।
স্থানীয় জেলে হরলাল জলদাস জানান, গত কয়েকদিন আগে ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় নদী ও সাগরের মাছ ধরতে যেতে পারেননি। এতে করে অনেক জেলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যান না। সরকারি সহায়তাও পাননি। সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, সরকারিভাবে বরাদ্দ চাল পাওয়া মাত্রই জেলেদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা বলেন, উপজেলার চারটি ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার নিবন্ধিত জেলে পরিবার রয়েছে। তবে সরকারিভাবে মাত্র ৩৪৫ পরিবারের জন্য প্রথম দফায় ৫৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ আসবে। বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এরপর দ্বিতীয় দফায় আরও ৩০ কেজি কেজি চাল বিতরণ করা হবে। সরকারিভাবে আর কোনো সাহায্য আসার সম্ভাবনা নেই। তবে অন্য জেলেদের জন্যও সাহায্য পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১জুন/এআর)
সংবাদটি শেয়ার করুন
বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে গৃহবধূর মাদরাসায় অবস্থান

কেশবপুরে দূর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা

ফরিদপুরে যাত্রীবাহী বাস থেকে গাঁজা ও মদসহ যুবক গ্রেপ্তার

ঝিনাইদহে নার্সদের ইন্টার্ন ভাতার দাবিতে কর্মবিরতি

‘একতরফা নির্বাচন করলে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিদেশেও আশ্রয় পাবেন না’

যশোর শিক্ষা বোর্ডের অডিট অফিসারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ

নতুন প্রজন্মকে ইনোভেটিব ও স্মার্ট হতে হবে: জুনাইদ আহমেদ পলক

দেবিদ্বারে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ

সাতক্ষীরায় ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
