নিত্যপণ্যের দাম নাগালে আসছেই না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০২ জুন ২০২৩, ১৫:০৮ | প্রকাশিত : ০২ জুন ২০২৩, ১৫:০৩

বাজারে মাছ, মাংস, চাল, ডাল, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আসছেই না। প্রতি সপ্তাহে লাফিয়ে লাফিয়ে প্রতিটি পণ্যের দাম যেন আকাশছোঁয়া। প্রতিটি পণ্যেই রয়েছে সিন্ডিকেট।

শুক্রবার সরজমিনে রাজধানীর হাতিরপুল বাজার, কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর বাজার ও রামপুরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বিক্রেতারা জানান, এক টাকায় কিনে বাজারে নিয়ে আসতে তিন টাকা পড়ে যায়। ফলে তাদের চার টাকায় বিক্রি করতে হয়। ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিলেই সব সমাধান হবে।

আরও পড়ুন>> প্রস্তাবিত বাজেটে আইএমএফের শর্ত পালনের আভাস স্পষ্ট: সিপিডি

সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি পটল ৬০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, তাল বেগুন ৭০ টাকা, ঢেড়শ ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, ডায়মন্ড আলু ৪০ টাকা, চায়না গাজর ১০০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, কেপসিকাম ২৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, চিকন লতি ৮০ টাকা, মোটা লতি ৬০ টাকা, কচুর মুখি ৯০ টাকা, বগুড়ার আলু ৫০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি চির ৩০ টাকা, জালিকুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকা, লাউ আকার বেঁধে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, ডাটাশাকের আঁটি ৩০ টাকা, পুঁইশাকের আঁটি ৫০ টাকা, কলমিশাকের আঁটি ১০ টাকা, লাউশাকের আঁটি ৪০ টাকা, পাটশাকের আঁটি ১৫ টাকা, কচুশাক ছোট আঁটি ১৫ টাকা, এলাচি লেবুর হালি ৩০ টাকা, কলম্বো লেবুর হালি ৩০ টাকা, কাগজি লেবুর হালি ৩০ টাকা, বম্বে মরিচের হালি ৩০ টাকা।

হাতিরপুল এলাকারা সবজি বিক্রেতা নিজাম উদ্দিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গত বছর যে সবজি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি সেই সবজি আজ ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিষয়টা হচ্ছে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে এবং আগামীতে আরও দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

হাতিরপুল এলাকার সবজি ক্রেতা মনিরুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সব সবজির দামই বেশি। সবজির উৎপাদন ও সরবরাহ কম হওয়ায় নাকি দাম বেড়েছে। এরকম ন্যাকা ন্যাকা কথা বলে ক্রেতাদের মন ভুলাতে পারবে না কোনো ব্যবসায়ী।’

তিনি বলেন, ‘আমি হিসাব করে দেখলাম গত এক বছরের ব্যবধানে সবজির বাজারে প্রতিটি পণ্যই ১০ থেকে ৬০ টাকা করে বেড়েছে দাম। এরকম যদি বেশি দামে কিনতে হয় তাহলে তো মানুষকে না খেয়ে থাকতে হবে।’

চাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মিনিকেট পুরাতন চাল ৭৫ টাকা কেজি, মিনিকেট নতুন চাল ৭০ টাকা, নাজিরশাইল পুরাতন ৮০ টাকা, নাজিরশাইল নতুন ৭০ টাকা, হাস্কি চাল পুরাতন ৬০ টাকা, নতুন হাস্কি ৫৮ টাকা, আটাশ চাল ৬০ টাকা, পাইজাম চাল ৫৬ টাকা, গুঁটি চাল ৫২ টাকা, স্বর্ণা চাল ৫৫ টাকা, বিআর ২৯ চাল ৬০ টাকা, চিনিগুঁড়া আতপ চাল ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার এলাকার জনতা রাইস মিলের মালিক মো. খলিল ঢাকা টাইমসকে বলেন, চালের দাম এখনও বাড়েনি। আগে যা বেড়েছিল তাই রয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে এক বা দুই টাকা ওঠানামা করে।’

কারওয়ান বাজার এলাকায় চাল কিনতে আসা বকুল মিয়া নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘চাল তো আগেই দাম বাড়িয়ে রেখেছে। এখন কী আর বাড়াবে? দুই বছর আগে যে চাল ৪০ টাকা কেজি কিনেছি সেই চাল আজকে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে।’ মাংসের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, খাশি ১১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, কেজি, লেয়ার মুরগি ৩৭০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া লাল ডিম প্রতিটি ১৩ টাকা, এক হালি ডিম ৫০ টাকা ও ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। প্রতিটি হাঁসের ডিম ১৮ টাকা, এক হালি হাঁসের ডিম ৭০ টাকা ও ডজন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা এলাকার ক্রেতা মিলন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘১০ দিন আগে লাল ডিমের হালি ৪৮ টাকায় কিনেছি। আজ কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকায়। এরকম বাজারে সবকিছুর দাম অতিরিক্ত। আর মাছ, মাংসতো আমার নাগালের বাইরে।’

তিনি বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ হওয়ার পর যে পণ্য আমাদের সব সময় লাগে সেই পণ্যের দাম বেড়েছে। আর ব্যবসায়ীরা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুরাতন পণ্যই বেশি দামে বিক্রি করা শুরু করে দিয়েছে।’ মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর চিংড়ি প্রতি কেজি ১১৫০ টাকা, গুলশা টেংরা ৫৫০ টাকা, ফলিমাছ ৪০০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০ টাকা, রাজশাহীর কই মাছ ২৬০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ টাকা, রুই মাছ ৩২০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৮০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা, বড় টেংরা ৭০০ টাকা, কাতল ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রিকশা চালক বিল্লাল মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মাছ-মাংস আমাগোর স্বপ্ন হইয়া গেছে। ডাইল-ভাত খাইতেই কষ্ট হইতাছে।’

মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ইন্ডিয়ান শুকনো মরিচের কেজি ৫০০ টাকা, তেজপাতা ২৫০ টাকা, দেশি মসুর ডালের কেজি ১৫০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুর ডাল ১১০ টাকা, ইন্ডিয়ান এঙ্কর ডাল ৮০ টাকা, অস্ট্রেলিয়ার ছোলা ৯০ টাকা, দেশি আদা ৩৫০ টাকা, আমদানি করা চীনা আদা ৫০০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ৩৬০ টাকা, ভিয়েতনামের আদা ৩০০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ার আদা ৩২০ টাকা, থাইল্যান্ডের আদা ৩৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, দেশি রসুন ১৬০ টাকা, চায়না রসুন ১৭০ টাকা, জিরা ৯০০ টাকা, এলাচ ৪০০০ টাকা, ধনিয়া ২২০ টাকা, লবঙ্গ ১৮০০ টাকা, গুঁড়া মরিচ ২৯০ টাকা, দারুচিনি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মধুবাগ এলাকার বাসিন্দা দুলাল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গত এক বছরের ব্যবধানে ৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে সব ধরনের মসলার। বাজারে মানুষ গেলে ব্যবসায়ীরা চুষে খাচ্ছে মানুষের কষ্টের পরিশ্রমের টাকা।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ধৈর্য ধরে বসে থাকতে হবে ভোক্তাদের। একটু ধৈর্য ধরার পর যদি ভালো কিছু হয়। তাহলে ধৈর্য ধরাটাই ভালো। আমাদেরও খারাপ লাগছে অস্থির বাজার দেখে। আমরা মাঠে আছি। সুফল আসবেই আমাদের।’ (ঢাকাটাইমস/০২জুন/পিআর/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

হজ ক্যাম্পে এক্সিম ব্যাংকের সেবা বুথ উদ্বোধন 

ঢাকার আশকোনা হজ ক্যাম্পে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বুথ উদ্বোধন

সাউথইস্ট ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ইউনিয়ন ব্যাংক ও মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ারের চুক্তি স্বাক্ষর

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অপারেশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ 

ডাক বিভাগকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব দিল নগদ

সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে স্বেচ্ছায় একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল

ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভ্যাল মঙ্গলবার শুরু

চাঁদপুরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের রেমিট্যান্স গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প নির্মাণে ব্যবহৃত হবে বসুন্ধরা সিমেন্ট

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :