আদালতকে পুলিশ কর্মকর্তার ফোন, ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ জুন ২০২৩, ১৮:৪৬

মানিকগঞ্জের একটি হত্যা মামলা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিচারপতিকে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার ফোন করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, বেশি স্বচ্ছতার জন্য কন্টাক্ট (যোগাযোগ) করে? এটি পেশাগত অসদাচরণ।

বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার একথা বলেন। পরে এই হত্যার ঘটনা পুনঃতদন্ত করে চার্জশিট দাখিলের জন্য আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল হত্যা মামলা নিয়ে ‘লাশ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত’ শিরোনামে গত ২ মার্চ একটি দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই ঘটনায় হাইকোর্ট গত ৩ এপ্রিল শুনানি নিয়ে কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। পুলিশ সুপারের নিচে নন—পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এমন একজন কর্মকর্তা দিয়ে মামলাটি অধিক তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। আজ নির্ধারিত দিনে প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। পরে শুনানি নিয়ে পুলিশ সুপারের যোগাযোগের বিষয় জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তার সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছেন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পি।

শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, হত্যা মামলাটির তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। কয়েকজন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সঠিক ও সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। মামলার বস্তুনিষ্ঠ সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থলের ডিজিটাল এভিডেন্স (সেল, কললিস্ট ইত্যাদি) সংগ্রহ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তসহ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মামলার তদন্তে আরও সময়ের প্রয়োজন। তদন্তের জন্য আরও ৯০ কার্যদিবস সময় বর্ধিত করার আরজি জানান তিনি।

আদালত বলেন, অধিক তদন্তের জন্য ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। আরও ৯০ দিন চাচ্ছেন। পুলিশ সুপার ফোন কল করেন। আদালতের জন্য এটি বিব্রতকর। উনি কি এটি করতে পারেন?

তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, ‘কোর্টের মর্যাদা সবচেয়ে বড়। তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ ও আদালতের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে। আদালতের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হবে, তা বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশনে রয়েছে। কোর্টের মর্যাদা সমুন্নত না রাখলে আমাদের মূল্যায়নও থাকবে না। পুলিশ সুপার কোর্টকে ফোন করার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছেন। আদালতের উদ্বেগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’

এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জির উদ্দেশে আদালত বলেন, ২৪ ঘণ্টায় এক তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে দেন। আদালত ৬০ দিন সময় দিলেও অধিক তদন্তের প্রতিবেদন দিতে পারলেন না।

(ঢাকাটাইমস/০৫জুন/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :